লিলুয়ার পর দমদমের সরকারি হোমে নৃশংস অত্যাচারের শিকার এক নাবালিকা

0

HnExpress নিজস্ব,প্রতিনিধি, দমদম ঃ সভ্যতা উন্নতির শিখরে উঠলেও কিছু মানুষ এখনো বর্বরতার আশ্র‍য়ে নিমজ্জিত। বর্তমান যুগে নারী নির্যাতনে পুরুষের সাথেও সমান ভাবে দায়ী নারীও। দমদমের একটি হোমে ৯ বছরের একটি বালিকাকে ওই হোমের সিনিয়র দিদিরা অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৯ বছরের বালিকার যৌনাঙ্গে লঙ্কার গুড়ো ছিটিয়ে এবং খুন্তি দিয়ে আঘাত করা হয় বারংবার।

এই নৃশংস অত্যাচার শুধু একদিন কিংবা দুইদিনের নয়, মাস চারেক ধরে তার উপর এই অত্যাচার চলছিল। মা-বাবা হীন এই মেয়েটি ক্যানিং-র তালদি এলাকার কৃষ্ণ কলোনি গ্রামের বাসিন্দা। মা বাবা মারা যাবার পর মাসির বাড়িতে থাকত দুই বোন মিলে। মাস চারেক আগে মাসির অজান্তে কাউকে কিছু না জানিয়ে তাদের দমদমের একটি হোমে রেখে দিয়ে আসে তাদের মেসো। কিছুদিন পর প্রায় জোর করেই স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ওই দুই নাবালিকাকে দেখতে জান মাসি।

এদিন হোমে গিয়ে মাসি দেখেন বারান্দার এক কোণে পড়ে রয়েছে মা বাপ মরা ওই আক্রান্ত নাবালিকা। সারা শরীরের দগদগে ক্ষতে ভর্তি। নির্যাতিতা ওই নাবালিকার অভিযোগ, তার হাতে জোর করে সেফটিপিন দিয়ে নিজেদের নাম খোদাই করে দিয়েছে হোমের সিনিয়ররা। এর পর নাবালিকার মাসি নাবালিকা ও তার বোনকে ক্যানিং এর নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন । বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এক প্রতিবেশী খবর দেন ক্যানিং থানা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা চাইল্ড লাইনে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খবর পেয়েই ক্যানিং থানার পুলিস ওই নাবালিকার বাড়িতে এসে ছিল। কিন্তু ঘটনাটি দমদম হোমের ঘটনা তাই তা দমদম থানার অন্তর্গত। ফলে আইনত ভাবে দমদম থানাতেই অভিযোগ দায়ের করতে হবে। আপাতত ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে ক্যানিং এর অন্তর্গত মহকুমা হাসপাতালে। কিছু মাস আগে লিলুয়ার একটি সরকারি হোম থেকে একই ভাবে অত্যাচারের শিকার হওয়া নাবালিকাকে উদ্ধার করে পূলিশ।

তারও সারা হাতে সেফটিপিনের ক্ষত ও দগদগে ঘা ছিল। অদ্ভুত বিষয় হল যে ওই হোমের সুপার কিছুতে মনে করতে পারেননি মাস তিনেক আগে ওই নাবালিকা হোমে ছিল কিনা। হোম ছাড়াও কলকাতার দু’টি বেসরকারি স্কুল ও বাঁশবেড়িয়ায় একটি স্কুলেও দুই শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় হয়ে ছিল গোটা রাজ্য।

স্কুলের ওই ঘটনায় কোন্নগর নবগ্রামের বাসিন্দা তথা একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা রাজেশ্বরী গঙ্গোপাধ্যায় বলে ছিলেন ‘‘আমার একরত্তি একটা মেয়ে আছে। এমন ঘটনায় আমি শিউরে উঠছি। আমার মনে হয়, আগে বড়দের জন্য সচেতনতা জরুরি। শিশুকেও যতটা সম্ভব বোঝাতে হবে। এ ছাড়া আর উপায় কী!’’

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply