হালিশহর বাগমোড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কলহে বোমাবাজি, পুলিশি তল্লাশিতে ধৃত ৫

HnExpress দেবাশিস রায়, হালিশহর : জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দুষ্কৃতীদের বোমাবাজির ঘটনা ঘটল হালিশহর বাগমোড়ের আচার্যপাড়া ট্যাঙ্কির মাঠ এলাকায়। এলাকা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল অর্থ্যাৎ সোমবার রাতে বাচ্চাটির জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল কার্তিক দেবনাথের বাড়িতে। রাত ১০টা নাগাদ কয়েকজন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে। উপস্থিত অতিথি অভ্যাগতরা বাধা দিলে তারা বোমা ছুড়তে থাকে। জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাড়িতে নিমেষে নেমে আসে আতঙ্কের ছায়া।
কিছুক্ষণের মধ্যে টহলরত বীজপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ আসতেই এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকেন। বীজপুর থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ ও এসআই তাপস ধারার নেতৃত্বে রাত ২টো অবধি বাগমোড় এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিতে ধরা পড়ে ৪জন দুষ্কৃতী।
বিশেষ সূত্রের খবর তারা বাগমোড় এলাকার এক তৃণমূল নেতার ছত্রছায়ায় লালিত। আর কার্তিক দেবনাথ আরেক তৃণমূল নেতার শিবিরের লোক। আসলে দলের গোষ্ঠী কলহের বহিঃপ্রকাশ এটি। এর দরুনই এঘটনা বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। এদিন রাতেই এলাকার মানুষ পুলিশকে অভিযোগ জানায়, বাগমোড়ের আচার্যপাড়া, ভাঙনপাড়া-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে তৃণমূলের কিছু নেতার মদতে অবাধে চলছে বাজি তৈরির কারবার। প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে এমনই একটি বাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ৩ মহিলার। আবার এই বাজি তৈরির কারখানাতেই তৈরি হয় বোমাও!
এলাকার মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল এসব জায়গায় বীজপুর পুলিশের দুই এএসআই তাপস ধারা ও গৌরব ব্যানার্জির নেতৃত্ব চিরুনি তল্লাশি চলে। খবর পেয়েই গা ঢাকা দেয় অবৈধ বাজি তৈরির কারবারিরা। প্রায় এক ম্যাটাডোর বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। উদ্ধার হয় কয়েক ড্রাম বোমা ও বাজি তৈরির বারুদ। যা পুলিশ ভাঙনপাড়ার পাশের খালে। পুলিশের জালে ধরা পড়েন লাটাই ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ী।
এলাকারই বহু মানুষ এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করেছেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার পুলিশ এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে হানা দিয়ে এধরনের অবৈধ ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের কারবারে নেমে পড়েন তৃণমূল নেতাদের দৌলতে। মাঠে মারা যায় পুলিশের অভিযান। আসলে তাঁরা বারুদের স্তূপে বসবাস করছেন। তাঁদের আতঙ্ক যে কোনও দিন ফের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।