সুপারস্পেশালিসটি হসপিটালের যুগে বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা চারঘাট হসপিটালে

HnExpress বিশেষ প্রতিনিধি, ইন্দ্র কুমার রায় : উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র চারঘাট। বিখ্যাত নাট্যকার যোগেশচন্দ্র এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এই চারঘাটে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। চারঘাট কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে প্রায় ১০০ টা গ্রাম। কিন্তু এই গ্রামবাসীরা আজ সবচেয়ে বেশি অসহায়। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী যখন সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল এর স্বপ্ন দেখছেন তখন স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশার অনন্য নজির দেখা গেল চারঘাট গ্রামীণ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। বহু দিনের পুরানো এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আজ থেকে বছর দশেক আগে বিধায়ক মোস্তাফা বিন কাশেম ১৫টি বেড বিশিষ্ট হসপিটালের শিলান্যাস করেন। কথা ছিল ইনডোর এবং আউটডোর সুন্দর ভাবে সেজে উঠবে। তৈরি হবে অপারেশন থিয়েটার, তৈরি হবে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র এক কথায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে হাবরা হসপিটাল বা ১৫ কিলোমিটার দূরের সাঁড়াফুল হসপিটালে আর রাত বিরেতে ছুটতে হবে না সাধারণ মানুষকে।
চারঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে অনেক জল বয়ে গেছে, রাজ্যে পালাবদল হয়েছে, কিন্তু বদলায়নি চারঘাট হসপিটালের ভবিতব্য। বর্তমানে একজন এমবিবিএস ডাক্তার এবং তিনজন স্টাফ নিয়ে চলছে এই হসপিটাল। ডাক্তার সৌরভ আচার্য সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত প্রায় পাঁচশো মানুষের সেবা করে চলেছে হাসিমুখেই। তাই তিনি চারঘাটের মানুষের কাছে দেবদূত। কিন্তু লজ্জার বিষয় রাজ্য সরকার চারঘাটের এই হসপিটালে কোনরকম সাফাই কর্মী নিয়োগ করেনি, তাই পরিষ্কার পরিছন্নতা যতটা পারেন সিস্টাররাই করেন।
তবে ডাক্তারবাবুর চেষ্টাই ৮ মাস আগে মাতৃকালীন প্রসব করানোর ব্যবস্থা হয়েছিল, কিন্তু সুষ্ঠু পরিকাঠামো না পাওয়ায় সৌরভ বাবু দুমাস আগে বন্ধ তা করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন হসপিটালে গেলে ১৫টি শয্যাবিশিষ্ট বেড তো দূরের কথা কোন ভর্তি নেওয়ারও ব্যবস্থা নেই। কুকুরে কামড়ালে, বিড়ালে কামড়ালে সাধারণ মানুষকে ছুটতে হয় বসিরহাট মহকুমা হসপিটালে। পশ্চিমবঙ্গ যখন এতটা এগিয়ে গেছে তখন ঠিক ততটাই পিছিয়ে আছে চারঘাটের স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
প্রতি বছর ঘটা করে ভোট হয় সাধারন মানুষ ভোট দিতে যায় কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হসপিটাল আর হয়ে ওঠে না। বর্তমান স্বরূপনগরের বিধায়িকা বিনা মন্ডল এবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি হয়েছেন তাই সমস্ত চারঘাটবাসী আশায় বুক বেঁধেছেন তাদের হসপিটালের হাল হয়তো এবার ফিরবে। ভবিষ্যতই বলবে চারঘাটের মানুষের জীবন নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কতটা নজর আছে বা নেই!