শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসল এসিয়াড গেমে সোনা জয়ী স্বপ্না বর্মনের পরিবার
HnExpress অলোক আচার্য, জলপাইগুড়ি : নিতান্তই গরিব পরিবার, নুন আনতে পান্তা ফুড়াচ্ছে নিত্য দিন। বাবা পেশায় রিক্সা চালক, দুই ভাই করে মিস্ত্রির কাজ, মা বাসনা দেবী পেশায় চা-বাগান কর্মী, তাও আবার দীর্ঘ নয় বছর কাজ নেই। মেয়ের অদ্যম পরিশ্রম দেখে মা বাসনা দেবীর বাসনা ছিল মেয়ে অনেক আগে যাক, অনেক নাম করুক। মায়ের বাসনাকে বাস্তব রূপ দিল মেয়ে স্বপ্না বর্মন। হ্যা এই স্বপ্না যে কিনা এশিয়া গেম ২০১৮ তে ভারত এ এনে দিয়েছে সোনার পদক। স্বপ্নার জন্য গর্বিত গোটা ভারত তথা জলপাইগুড়ি জেলার কালিয়াগঞ্জ সহ গোটা রাজ্য। জলপাইগুড়ি জেলার পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে স্বপ্না। হাজার রকম প্রতিকূলতার মধ্যে তিলে তিলে নিজেকে তৈরি করা, সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম, কিন্তু জুটতো না প্রয়োজন মত পুষ্টি। পরিবারের সবাই নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছেন স্বপ্নার স্বপ্ন পূরনে। সত্যি আজ কি স্বপ্নার স্বপ্ন পূরন ? বলতে পারেন প্রাথমিক স্বপ্ন পূরণ, কারন তার স্বপ্ন আসন্ন অলিম্পিক গেমস। কাল থেকেই পাড়া প্রতিবেশিদের উচ্ছাস চলছে। ঘরের মেয়ের সাফল্যে খুশি তারাও। আজ সকাল হতেই স্বপ্নার বাড়ির দরজায় হাজির পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে। এর পর মূখ্যমন্ত্রী নিজে ফোনে কথা বলেন স্বপ্নার মা বাসনা বর্মনের সাথে তাদের পরিবার চলছে, কিভাবে স্বপ্না খেলাধূলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফোনে স্বপ্নার মা বাসনা দেবী মূখ্যমন্ত্রীকে বলেন, স্বপ্না রাজ্য সহ দেশের মূখ উজ্জ্বল করেছে, আমি নিজে কিছুই চাইব না, আপনারা কি করবেন সেটা আপনাদের ব্যপার। এছাড়াও এদিন স্বপ্নার পরিবারকে শুভেচ্ছে জানাতে আসেন এসজেডিএ চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক আলিপুরদুয়ার ড.সৌরভ চক্রবর্তী, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রতিক লাল ঝা, দুলাল দেবনাথ, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক তাপসি সাহা, মহকুমাশাসক রঞ্জন দাস, প্রাক্তন বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা জেলা এসসিএসটি সেলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস, জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে আসেন সভাধিপতি নূরজাহান বেগম সহ বিভিন্ন আধিকারিক গন।
পর্যটন মন্ত্রী বলেন, আজকে এটা খুবই গর্বের বিষয়, এথলেট এটা খুবই টাফেষ্ট ইভেন্ট, সেখানে এইরকম একটা প্রতন্ত্য গ্রাম থেকে এত সংগ্রাম করে, অতি মধ্যবিত্ত পরিবার সেখান থেকে উঠে এসেছে এবং সে কোলকাতায় সাই এ থেকে নিজের পড়াশোনাটা করছে। ও অনেক এগিয়ে যাবে। মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী খুবই খুশি, কালকে তিনি নিজে আমাকে ফোন করে বলেছেন আমাকে এখানে আসতে, রাজ্য সরকারের শুভেচ্ছা বার্তা পৌছে দিতে বলে জানান তিনি।
এসজেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, জেলার মেয়ে স্বপ্নার এশিয়াড গেমস এ সোনা ছিনিয়ে নিয়ে আসার যে গৌরব, তার জন্য আগামী তিনদিন আমাদের জলপাইগুড়ি জেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। আগামী পরশুদিন স্বপ্না কোলকাতায় ফিড়ছে, তার পর সে উত্তরবঙ্গে পা দেওয়ার সাথে সাথে আমরা তাকে সংবর্ধনা দেব এবং তিনদিন আমরা প্রশাসনিক স্তরে ও আমাদের দলের তরফে সমস্ত মানুষদের নিয়ে আমরা আনন্দ করব আমাদের দেশের এই গর্বকে নিয়ে।
স্বপ্নার এই সাফল্যে রাজ্যবাসী, জেলাবাসী, পাড়া প্রতিবেশি সকলেই আজ গর্বিত।