লাইসেন্সবিহীন ভুটভুটি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে শহর

HnExpress পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুর ঃ তিন চাকার রিকশা ভ্যান জাতীয় এই ভুটভুটি গাড়ি কখনো কেরোসিন বা ডিজেলও চলে। শুধুমাত্র খরচ কমাতে জেলা জুড়ে প্রায় সব চালকই কেরোসিন দিয়ে ভুটভুটি চালানোর দিকে ঝুঁকেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ভুটভুটির রমরমা, ফলে তার সাথে বেড়ে উঠছে বায়ুদূষণও। ভুটভুটি থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় ভরে উঠেছে শহর।

প্রসঙ্গত, জেলার সমস্ত ভুটভুটিই কিন্তু বেআইনি ভাবেই চলছে। এগুলোর কোনো বৈধ কাগজ নেই, তাও দিনের পর দিন প্রচন্ড শব্দ করে এবং বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বের করতে করতে রাস্তার উপর দিয়ে যত্রতত্র যেখানে সেখানে ছুটে চলেছে আর তা হচ্ছে কার্যত প্রশাসন কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে। জেলার প্রতিটি শহরই ভরে যাচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়ায়। এই বিষয়ে জেলার পরিবেশ কর্মী তুহিন শুভ্র মন্ডল জানান, ভুটভুটির ধোঁয়ায় বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস থাকে সেগুলো মিশে বাতাস দূষিত হচ্ছে ভুটভুটি ধোঁয়া পরীক্ষা করে তবে ছাড়পত্র দেয়া উচিত তা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন বাতাস পাবে না তার ফলে জীব জগতের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।

আরো অন্যান্য পরিবেশ কর্মীদের দাবি ভুটভুটির কালো ধোঁয়ায় রয়েছে কার্বন মনোক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক উপাদান, এই অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস যা মানুষের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। বাতাসের সঙ্গে এই বিষাক্ত গ্যাস শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের প্রদাহ ছাড়াও মাথার নানান অসুখ দেখা দেয়, বয়স্ক ও শিশুদের উপরে ভুটভুটি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া খুবই খারাপ প্রভাব ফেলে। অভিযোগ ভুটভুটি নিয়ন্ত্রণে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। তাই শুধু মাত্র কম টাকা লাগিয়ে ভুটভুটি কিনে তা ব্যবসায়ীরা কম খরচে মালপত্র পরিবহন কর চলেছে। সম্প্রতি, রতন মন্ডল নামে এক ভুটভুটি চালক জানান, শুধুমাত্র ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ করলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ধারে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা গ্যারেজ গুলিতে ভুটভুটি তৈরি করা হয় সেখান থেকে আমরা গাড়ি কিনি।

প্রতিদিন প্রশাসনিক নজরদারি না থাকায় তাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওভার লোড করে বিভিন্ন মালপত্র বয়ে বেড়াচ্ছে এসব ভুটভুটি। পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসিনতা ও অবহেলার কারণে এইভাবে যত্রতত্র ভুটভুটি চলতে পারছে। যদিও অন্যদিকে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে তারা এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে, ভুটভুটি গুলির কোন কাগজপত্র নেই তা আমরা শুনেছি সে গুলোকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাটারি চালিত যানে রুপান্তরিত করে এই সমস্যা মেটানোর পরিকল্পনা চলছে। তবে কবে এই সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে চিন্তিত সুশীল সমাজের একাংশ থেকে শুরু করে এলাকার পরিবেশবিদরা, চিন্তায় আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎও। অনিয়ন্ত্রিত বেআইনি লাইসেন্সবিহীন ভুটভুটি থেকে নির্গত কালো ধোয়ায় বিষাক্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ, তার জেরে আজ অস্তিত্ব সংকটে মানবজাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

Leave a Reply

Latest Up to Date

%d bloggers like this: