বইমেলা- ৯ পর্ব

HnExpress সম্রাট গুপ্ত, ৬ ফেব্রুয়ারি :
বাংলায় মেয়েদের লেখালেখি কবে থেকে, কীভাবে শুরু হল? সেই আলোচনায় পরে আসব। শুরুতে এারের বইমেলায় মহিলাদের লেখালেখির ওপর এক ঝলক আলোকপাত।

‘মানুষীর বই ঘর’ নারী বিষয়ক বই ও ‘মানুষী কথা’ পত্রিকার সমাহার নিয়ে নাগরিক মঞ্চের স্টল। স্টল নং ১৯৫। বই মেলার ৭ ও ৮ নং গেটের কাছে আসুন। প্রয়োজনে ফোন করুন ৯৪৩২২০৯৭৭০।

‘মানুষী’ মহিলাদের একটি মাসিক পত্রিকা। বিশেষত মেয়েদের জন্য সব লেখা। অর্থনীতি, সমাজনীতি, সমাজ, পরিবেশ নিয়ে। বিষয়- তিন তালাক প্রসঙ্গ, নারী চেতনা, হাসপাতালের অভিজ্ঞতা প্রভৃতি।

উনবিংশ শতকের শেষদিকে ‘অন্তঃপুর’ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা; সম্পূর্ণ মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ছিল এটি। একমাত্র মহিলাদের লেখাই এতে প্রকাশিত হত। পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন ‘ভারত শ্রমজীবী’ খ্যাত সেবাব্রতী শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয়া কন্যা বনলতা দেবী। বনলতা মাত্র ১৭ বছর বয়সে এই পত্রিকা প্রকাশ করেছেন। সম্পাদনার কাজে তাকে মহিলাদের লেখা সংগ্রহ করতে হয়েছে।

সে যুগে কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না। মহিলা লেখকদের সংখ্যাও ছিল অনেক কম, যোগাযোগের ব্যবস্থাও ছিল অনুন্নত। দু’বছর সম্পাদনার পর অকালে মৃত্যু ঘটে বনলতার।

তার পর ‘অন্তঃপুর’-এর সম্পাদিকা হন হেমন্তকুমারী চৌধুরী। হেমন্তকুমারী ১৮৬৮ খৃষ্টাব্দে লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সার্ধশতবর্ষ কেটে গেল। এ নিয়ে কোথাও, কোনও আলোচনা হয়েছে বলে শুনিনি। মাঘ ১৩০৪ থেকে বৈশাখ ১৩১১ পর্যন্ত তিনিই পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।

এর আগে ১২৯৪ বঙ্গাব্দে হিন্দি ভাষায় ‘সুগৃহিণী’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর কিছু লেখা বই হল ঃ– ‘আদর্শমাতা’; ‘নবীন শিল্পমেলা’ (উল বোনার বই); ‘নারী পুষ্পাবলী’ (আদর্শ মহিলাদের জীবনী)। হেমন্তকুমারী টেক্সট বুক কমিটির পুরস্কারও লাভ করেন।

‘অন্তঃপুর’-এ যাদের লেখা প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে ছিলেন – কামিনী রায়, তরুলতা দেবী, কাদম্বিনী দেবী, নিস্তারিণী দেবী, সরোজিনী বসু, শরৎকুমারী দেবী, গিরিবালা সেনগুপ্ত, প্রিয়ম্বদা দেবী, লজ্জাবতী বসু, হেমলতা দেবী, অম্বুজাসুন্দরী দাস গুপ্ত, প্রসন্নময়ী দেবী প্রমুখ। প্রায় সবাই লেখিকা হিসাবে তখন বেশ প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

Leave a Reply

%d bloggers like this: