মাটির ভার বানিয়ে চলছে না পেট, নিরুপায় শিল্পী

HnExpress সুদীপ ঘোষ, নদীয়া ঃ টাকা মাটি, মাটি টাকা, রামকৃষ্ণের এই বাণী যথার্থ ভাবে কার্যকর আজকের সমাজে। পেট চালানো অথবা সংসার চালানোর জন্য অনেকে অনেক কাজ করে থাকেন, আবার অনেকেই শুধু পারিবারিক ব্যাবসা সামলান এবং সেই ব্যাবসা চালাতে থাকেন বংশ পরম্পরা অনুসারে। সেই রকম এক মৃৎ শিল্পীর সাথে মুখোমুখি কথা বলে নিল HnExpress এর সংবাদ প্রতিনিধি। নদিয়ার সাতগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ পাল।

তিনি একজন পেশাদারি মৃৎ শিল্পী, তবে তিনি মাটির পুতুল বানান না। তিনি বানান মাটির ভাড় বা খুঁড়ি। বংশ পরম্পরায় তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। আগে এই ব্যবসা করে তিনি সচ্ছল ভাবে সংসার চালাতেন, কিন্তু আজকাল তার এই পেশায় পেটও ঠিকমতো চলে না এটা বলাই বাহুল্য।

নারায়ণ তাঁর বাবুর বক্তব্যে আমাদের জানান যে, আগে মাটি বিনামূল্যে সংগ্রহ করতেন তিনি। কিন্তু এখন তা কিনতে হয় এবং তাও আবার চড়া দামে। তার উপরে তো আছে হাড়ভাঙা পরিশ্রম। এবং তার উপর মাটির ভাড় মানুষের কাছে এখন কম প্রয়োজনীয়। সরকার থেকেও কোন সাহায্য পাই না আমরা। বরং এখন যেকোনো চায়ের দোকান থেকে হোটেল রেস্টুরেন্টে মাটির ভাড় প্রায়ই চলে না বললেই হয়। কাগছের কাপ বাজারে এসে এই ব্যাবসার ইতি টেনে দিয়েছে।তিনি আর কিছু করতে পারে না, এই ভার প্রস্তুত করে কিছু টাকার প্রস্তুত করে কোনো রকমে টানাটানির মধ্যে দিয়ে সংসার চালায়।

অত্যাধুনিক জিনিস বেরিয়ে পুরোনো ব্যবহারিক জিনিসের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং এই সমস্ত মৃৎ শিল্পীর প্রতিভা নষ্ট হতে চলেছে সেটা বোধহয় বলাই বাহুল্য। তবে তিনি জানান, তিনি আর কিছু দিন পর এই পেশা থেকে বিরত হবেন এবং তার ছেলেকে এই পেশায় যুক্ত করতে তিনি অনিচ্ছুক প্রকাশ করেন।

তাহলে কি বাংলার কুটিরশিল্প ব্যবসা থেকে এমন একটি হস্তশিল্পের করুণ পরিনতি ঘটতে চলেছে? সত্যি কি তবে অবলুপ্তির পথে এই মৃৎ শিল্প? তাঁর কথায় এটা আশ্চর্যের বিষয়, এই ভাড় শিল্প প্রায় অবলুপ্তির পথে, অথেচ কুটির শিল্পের উপর এত জোর দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে, সেখানে এই বিষয় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় সরকার।

Leave a Reply

Latest Up to Date