ভোকাট্টা থেকে আর এক কদম আগে!

0

HnExpress দেবাশিস রায়, বারাসাত : বারাসাত কলোনি মোড় থেকে ওভারব্রিজ হয়ে চাঁপাডালির দিকে বাইকে চেপে যাচ্ছিলেন বারাসাতের বাসিন্দা পুলক রায়চৌধুরী। তাঁর আসল বাড়ি হিঙ্গলগন্জে। বাইকের পিছনে তাঁর ছোট্ট মেয়েটি বসে। পরম নিশ্চিন্তে দুজন বাপ-বেটিতে মাথায় হেলমেট পরে খোশ মেজাজেই যাচ্ছিলেন! ব্রিজের মাঝামাঝি আসতেই পুলকবাবুর গলায় কী যেন এসে জড়ালো। বাইকটা কোনোমতে থামালেন। অবশ্য তারমধ্যে যা হবার হয়ে গেছে। অনেকটা সিনেমার মতো। একহাতে নিজের গলা চেপে ধরে আরেক হাতে লিফট চাইছেন। মেয়েটা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। তাঁর হাত ছাপিয়ে ভিজে যাচ্ছে জামা।

18-Sep2018

স্কুলের প্রেসের কিছু কাজ করে দেন সৌমেনবাবু। উনি পুলকবাবুর ওই অবস্থা দেখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। বারাসাত হসপিটালের ইমারজেন্সি নিয়ে গেলেন তাঁকে। সরাসরি ওটি টেবিল। গলায় ঘ্যাচ ঘ্যাচ করে পড়ল আটটা সেলাই। ডাক্তার জানালেন, শ্বাসনালিটা কোনোমতে বেঁচে গেছে! না হলে? এধাক্কায় ভোকাট্টা!
হসপিটালে ছুটে এলেন বন্ধুরা। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে হসপিটাল থেকে ছুটি আদায় করে বাড়িতে নিয়ে যান পুলকবাবুকে। স্কুলের সহকর্মীরাও সারাক্ষণ ছিলেন পাশে।

41913308_740578382954870_17

গতকাল এখবর লোকমুখে চাউর হতেই পুরসভা থেকে দেখা করে গেছেন ভাইস চেয়ারম্যান। পুলকবাবু তাঁকে হাত জোড় করে বললেন, প্লিজ রাস্তাঘাটগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কিছু একটা ব্যবস্থা করুন। বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে  সারা রাস্তা জুড়ে কড়া মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ির সুতো ছড়িয়ে আছে। যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ বিপদে পড়বেন! সবাই তো আমার মতো ভাগ্যবান নাও হতে পারেন! সবার সেলাই করার মত পরিস্থিতি নাও থাকতে পারে! এর পাশাপাশি তিনি জনস্বার্থে আবেদন করেন, প্লিজ এই ঘুড়ির কটাদিন আপনারা নিজের স্বার্থে এবং পরিবারের স্বার্থে বাইক/ সাইকেল পরিবহণ পরিত্যাগ করুন। তার সাথে পথচলতি মানুষেরও বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে, তাই সকলেরই উচিত সকলের স্বার্থে সতর্ক থাকা। আমাদের আনন্দ উৎসব আলো অপরের জীবনে যেন অন্ধকার না নিয়ে আসে সেদিকে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ, ভোকাট্টা হওয়াটা সবটা আমাদের হাতে না হলেও কিছুটা দায়ী আমরাও বটে!

তথ্য ও ছবির সূত্র: পুলক রায়চৌধুরীর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত।

Leave a Reply

%d bloggers like this: