বেলঘরিয়া পুলিশের উজ্জ্বল ভূমিকায় ঘরে ফিরল নব দম্পতি
HnExpress শুভ ঘোষ, বেলঘড়িয়া : রাত তখন প্রায় ১২ঃ২০ মিনিট। মাথায় লেপ্টে রয়েছে সিদুর। চুল আলুথালু। তরুণীর চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। সঙ্গে রয়েছে এক যুবক। তাঁরা সদ্য বিবাহিত নব দম্পতি। তরুণীর চোখের কোণে জল চিকচিক করছে। চোখের জল মুছতে মুছতে ওই তরুণী বধূ ডিউটি অফিসারকে জানালেন, তাঁকে এবং তাঁর স্বামীকে ভাসুর বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিয়েছে। বেলঘরিয়া থানার টেবিলে তখন ডিউটি করছেন বরিষ্ঠ এএসআই রোহিত সরকার। ওই তরুণী বধূর থেকে বিস্তারিত মন দিয়ে শুনে তাদের ঘরে ফেরাতে উজ্জ্বল ভূমিকা নিলেন এএসআই রোহিত সরকার।
সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণীর শ্বশুর বাড়িতে পুলিশ পাঠালেন। এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেদের অত্যন্ত মানবিক ভাবে বোঝালেন, তরুণী এবং তাঁর স্বামী দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক। তাঁরা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এ বিয়ে এভাবে ভাঙা যায়না। প্রথমে মানতে না চাইলেও পরে গ্রেফতারের ভয় দেখালে রাজী হন ঘরে ফেরাতে। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারেন, ওই যুবকের নাম উমেশ ঠাকুর (২৯), বাড়ি বেলঘরিয়া থানা এলাকার ইটখোলাতে। ওই যুবকের দাদা চার লক্ষ টাকা পনের বিনিময়ে অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেছিল ভাইয়ের। কিন্তু উমেশ দাদার ঠিক করা মেয়েকে বিয়ে না করে ভালবেসে সুইটি মিশ্র(২১) কে বিয়ে করে। আর সেই রাগেই ভাই আর নব বিবাহিত ভ্রাতৃ বধূকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে তারিয়ে দেয় উমেশের দাদা।
রাতের অন্ধকারে কোথায় থাকবে নবদম্পতি? এই ভেবেই যখন তাঁদের রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল। ঠিক তখনই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এএসআই রোহিত সরকার। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে অসহায় ওই নব দম্পতিকে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে আসেন। অনেক সময় অভিযোগ ওঠে, পুলিশের কাজ না করার। কিন্তু পুলিশ কাজ করলে যে, অনেক অসাধ্য সাধন করতে পারে এক লহমায়। তারিয়ে দেওয়া নব দম্পতিকে ঘরে ফিরিয়ে দিয়ে তারই প্রমাণ দিলেন বেলঘরিয়া থানার এএসআই রোহিত সরকার। ঘরে ফিরে নবদম্পতির মুখে হাসি ফুটল। তাঁরা দুজনে এবং প্রতিবেশীরা বেলঘরিয়া থানার এএসআই রোহিত সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।