সম্পাদকের কলমে ঃ বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছেন সেকালের দুই তরুন তূর্কি
HnExpress সম্পাদকীয় সাপ্তাহিক, ৭ ফেব্রুয়ারি, বিশেষ প্রতিবেদন ঃ ১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস। কলকাতা তখন উত্তাল। মুখ্যমন্ত্রী তখন জ্যোতি বসু। রডন স্ট্রিটে কালচারাল কাম মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা হল। এ রাজ্য তখন বামেদের দূর্ভেদ্য দূর্গ। বিরোধীরা তুলনায় অনেক দূর্বল। কিন্তু সেই দূর্বল কংগ্রেসের লাগতার আন্দোলনে ব্যর্থ হল সরকারের পরিকল্পনা।
আন্দোলনে অন্যতম মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর তিন বছর আগেই যাদবপুর আসনে জিতে সাংসদ হয়েছেন। তখন থেকেই, বলা যেতে পারে আরও আগে থেকে, ওঁরা দু’জন নেত্রীর সঙ্গী। ওঁরা দু’জন, মানে মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রথম জনের জন্ম ১৯৫৪-তে, নেত্রীর এক বছর আগে। তুলনায় শোভন অনেকটাই ছোট, জন্ম ১৯৬৪-তে।
এর পর বার বার এই তিন জন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল বাম সরকারের। ১৯৯০-এর ৩০ মে ঘটল বানতলার সেই রোমহর্ষক ঘটনা। অনিতা দেওয়ান-সহ একাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর হতাহত হওয়ার ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রাজ্য। দিনের পর দিন এগুলি ছিল সংবাদপত্রের লিড নিউজ। বিরোধীদের আন্দোলনে প্রায় দিশেহারা সরকার।
১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মমতার নেতৃত্বে মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। অনেকে হতাহত হয়। নেত্রীর প্রধান দুই দোসর ছিলেন মদন-শোভন। ১৯৯৮-এর ১ জানুয়ারি নতুন দল তৈরি হল। নেত্রীর ছায়াসঙ্গী রয়ে গেলন ওঁরা দুই তরুণ তূর্কি।
দীর্ঘকাল ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন আন্দোলনের মুখ। মূল সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন মদন-শোভন। যুগান্তরের সাথে সাথে ওঁরা নেত্রীর থেকে দূরে সরে গেছেন। তৃণমূলের কোনও আন্দোলনে এখন আর ওই দুই তরুণ তূর্কি দিদির পাশে নেই। আমজনতাও বুঝি আস্তে আস্তে ভুলতে বসেছে সেকালের দুই দাপুটে নেতাকে। ইতিহাস বুঝি এ রকমই।