বিশেষ প্রতিবেদন : “বিপদ পদে পদে” ১২তম পর্ব
HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা : ১৯৭৮ সালে, মানে চার দশক আগে বড় আগুনের সাক্ষী হয়েছিল কলকাতা। সে দিন সন্ধ্যায় পুড়ে ছাই হয়েছিল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের ডালহৌসি শাখা। পূর্ব রেলের সদর দফতরের উল্টোদিকে ফেয়ারলি প্লেসের অফিস অধ্যুষিত এলাকায় পাঁচদিন ধরে দক্ষযজ্ঞ চলে।
আগুনের তাপ এত তীব্র ছিল যে ব্যাঙ্কের স্পেশাল স্টিলের ভল্ট গলে যায়। গোড়ায় দমকল গুরুত্ব বুঝতে না পেরে নিজেদের ট্যাঙ্কারে জল এনে ঢালতে শুরু করে। পরে ব্যাপারটার গভীরে গিয়ে বুঝতে পারে ট্যাঙ্কার নয়,লালদিঘিও নয়, চাই মা গঙ্গার দাক্ষিণ্য। সে সময় প্রায় ১০ দিন স্ট্র্যান্ড রোড বন্ধ ছিল। কারণ দমকলের অগুনতি ক্যানভাসের হোসপাইপ ফেয়ারলি প্লেস থেকে গঙ্গা অবধি সাপের মতো এঁকেবেঁকে পোর্ট কমিশনার্স এর গঙ্গা তীরবর্তী বিভিন্ন গুদামের গা ঘেঁষে নেমে গিয়েছিল জলের তলে। তবু ওই আগুন নেভাতে লেগে যায় ৫ দিন। পরের ৫ দিন খরচ হয় দমকল ও পুলিসের তদন্তে। তখন টিভি-র দাপট ছিল না। প্রচুর লেখালেখি হয় কাগজ গুলিতে। তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু বিপদ থেকে গিয়েছে সেই পায়ে পায়েই।
এ শহরে তপসিয়ায় একাধিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হল ২০০৬-এর ২২ নভেম্বরের ঘটনা। আগুনে চামড়ার কারখানা পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। বাগরি মার্কেটের আগে আগুন লেগেছিল কাছেরই নন্দরাম মার্কেটে। ১০ বছর আগে যে বিধ্বংসী আগুল লেগেছিল তা এখনও ভুলতে পারেননি শহরবাসী। ২০০৮ এর ১২ই জানুয়ারি সর্বহারা হয় নন্দরাম মার্কেট এর ব্যবসায়ীরা। ক্ষতি হয় প্রায় একশো কোটি টাকা। পুড়ে ছাই হয় যায় চারশো দোকান। নন্দরাম মার্কেট ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ব্যবসায়ীদের চাপে তা বাস্তবায়িত করা যায়নি।
এখনও পর্যন্ত এই শতকে এ শহরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সব থেকে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১০ সালের ২৩ মার্চ দুপুরে লাগা আগুনে প্রায় ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ৪০ টি দমকলকে আগুন নেভানোর কাজে লাগানো হয়েছিল। সেই সময় তৎকালীন বাম সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
(সমাপ্ত)