প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা, প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি সুরাহা
HnExpress বিশেষ প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর : নারায়ণগড় ব্লকের হেমচন্দ্র কানুনগো চক্রের বড়মোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থার জন্য পঠন-পাঠন চলছে বারান্দায়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মনিষা ঘোষের অভিযোগ প্রায় ৪ বছর ধরে বিদ্যালয় এর পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে ও জল পড়ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছেনা।
এই বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনী থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত ১৫৭ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ৬ জন। কিন্তু সঠিক পরিকাঠামো না থাকার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না তাঁদের অভিভাবক-অভিভাবকেরা। তাদের অভিযোগ, স্কুলের পলেস্তারা খসে পড়ছে, জল পড়ছে, যেকোন মুহুর্তে ছাদ ভেঙে পরে কোনো বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তবুও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের।
প্রসঙ্গত, গত ১৪.০৭.২০১৫ তারিখ স্কুল ছুটির পর দোতলার ছাদ ও একতলার দুটি শ্রেনীকক্ষের বিশাল অংশের পলেস্তারা খসে পড়ে। তার পরই প্রয়োজনীয় সমস্ত দপ্তরে লিখিত আবেদনের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় শীঘ্র সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, কিন্তু আজ পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোন প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
শর্মিলা মুর্মু নামে এক অভিভাবিকা সংবাদমাধ্যমকে বললেন যে, আমি মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে এক দন্ড শান্তিতে ঘরে থাকতে পারিনা। এমনিতেই ভাঙ্গা স্কুল, তার ওপর কখন যে কি দুর্ঘটনা ঘটবে তার কোন ঠিক নেই। তাই মেয়েকে আজকাল স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়।
তৃপ্তি দাস নামে এক মহিলা বললেন, আমার ছেলে ক্লাস ওয়ান-এ পড়ে। ছেলে কে স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। যে কোন মুহুর্তে স্কুল ভেঙ্গে পড়তে পারে। যতক্ষন ছেলে স্কুলে থাকে ততক্ষন আমরা চিন্তায় থাকি। নন্দীনি চক্রবর্ত্তী নামে এক অভিভাবিকা বললেন, স্কুলের ভেতর জল ঢুকছে। কখনও ছাদ ভেঙ্গে পড়ছে, কখনও দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ছে। বারান্দায় ক্লাস হচ্ছে। খুব কষ্ট হয় ছেলে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে। বিদ্যালয়ের সহশিক্ষক সঞ্জয় পন্ডিত বললেন, ২০১৪ সাল থেকে আমি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। ২০১৫ সাল থেকেই বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা। ছাদ ভেঙ্গে পড়েছে নিচের দুটি কক্ষের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বাধ্য হয়ে তিনটে ক্লাস বারন্দায় করতে হয়। এদিকে বর্ষাকাল বলে জলও ঢুকছে। সব মিলিয়ে একটা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে স্কুল চলছে।
সহশিক্ষিকা মুমু প্রধান বলেন, এখন সমস্য এতটাই বেড়ে গেছে যে বেশি বৃষ্টি হলে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি ফিরিয়ে দিতে হয়। পাশাপাশি অফিস ঘরেরও পলেস্তারা খসে পড়েছে জায়গায় জায়গায়, তাই আমাদেরও অফিসে বসতে গেলে ভয় হয়। একবার নয় বার বার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, কিন্তু বিদ্যালয় সংস্কারে জন্য আজও কেউই কোন উদ্যোগ নেয়নি। জানি না আগামীতেও নেবেন কিনা!