বাগনানের শরৎমেলার এবারে ৪৭শে পদার্পণ
HnExpress বাপ্পাদিত্য ঘোষাল, বাগনান : কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে বাগনানের পানিত্রাস হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত শরৎ মেলা। এ বার ৪৭ বছরে পা দিয়েছে মেলা। এবারের শরৎ মেলার মূল সুর- সুদৃঢ় হোক “সম্প্রীতি ও সংহতির বন্ধন”। আয়োজনে শরৎ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও শরৎ মেলা পরিচালন সমিতি, সহযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেরা হল আকর্ষণ মনোরম পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নানান প্রতিযোগিতা থাকবে এই মেলায়। যা এখানকার গুরুত্ব রাজ্যবাসীর কাছে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
উপস্থিত ছিলেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর প্রপৌত্র জয় চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক পুলক রায়, সুকান্ত পাল ও চলচ্চিত্র পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী মহাশয় এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ছাপার অক্ষরে শরৎকাহিনীর সঙ্গে পরিচিত নন এমন বাঙালি বিরল। তাঁর লেখা উপন্যাস এবং ছোট গল্প নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্রের সংখ্যাও কম নয়। সে সবের সঙ্গেও পরিচিত বহু মানুষ। মেলাতেও ‘অরক্ষণীয়া’, ‘বামুনের মেয়ে’, ‘রামের সুমতি’-র মতো উপন্যাস এবং ছোট গল্পের নায়কদের অবাধ বিচরণ। পানিত্রাসের গা ঘেঁষেই সামতা ও গোবিন্দপুর। শরৎচন্দ্রের দিদি অনিলাদেবীর বিয়ে হয়েছিল গোবিন্দপুরে। সেই সূত্রে এলাকায় যাতায়াত ছিল তাঁর।
পরে সামতায় জমি কিনে শরৎচন্দ্র বাড়ি তৈরি করেন। গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে বাড়ি হওয়ায় তিনি গ্রামের নাম দিয়েছিলেন সামতাবেড়। মাটির দোতলা বাড়িতে মৃত্যুর আগের শেষ ১২টা বছর তিনি কাটিয়েছিলেন। পথের দাবি, বিপ্রদাস, শ্রীকান্তর তৃতীয় ও চতুর্থ পর্ব লিখেছিলেন এই বাড়িতে বসেই।জীবদ্দশায় তো বটেই, কথাশিল্পীর মৃত্যুর পরেও সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে এই বাড়ি তীর্থক্ষেত্র হিসাবে গণ্য হয়ে আসছে।
এখনও প্রচুর মানুষ কথাশিল্পীর স্পর্শ পেতে আসেন। কথাশিল্পীর এমন জনপ্রিয়তাকে সামনে রেখে উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে এলাকাও। দেউলটি থেকে প্রায় তিন কিলো মিটার বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটি ঝাঁ চকচকে। ইতিমধ্যে বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করে তার সংস্কার করেছে হেরিটেজ কমিশন। রয়েছে শরৎস্মৃতি গ্রন্থাগার। শুরুর বছরে মেলা ছিল একদিনের, পরে তার মেয়াদ বেড়েছে, চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।