বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা

0

HnExpress সম্রাট গুপ্ত, মেদিনীপুর, ১৯ জানুয়ারি : প্রচারমাধ্যম এখন একটা ব্যবসা। এটা টিঁকিয়ে রাখা একটা দায়। কিন্তু এই সঙ্গে সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনও সাংবাদিকের দায়িত্ব। এই দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে হবে। শনিবার মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) আয়োজিত এক আলোচনাচক্রে এই মন্তব্য করলেন কলকাতা দূরদর্শনের বরিষ্ঠ সাংবাদিক তথা কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর। আলোচনার বিষয় ছিল বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে প্রচারমাধ্যমের ভূমিকা। আলোচনায় আমন্ত্রিত অপর দুই ‘রিসোর্স পার্সন’ ছিলেন অশোক সেনগুপ্ত এবং পুলকেশ ঘোষ।

স্নেহাশিসবাবু আলোচনায় বলেন, বাড়তি দর্শক বা পাঠক চাই, কাগজের দাম বাড়ালেও চলবে না। কর্মীদের বেতন ও অন্যন্য খাতে খরচ বাড়ছে। এই আবর্তে বিভিন্ন বিষয়ের সংমিশ্রণে টিঁকে থাকতে হয় সেই সংস্থাকে। তাই বিজ্ঞাপনটা ভীষণ জরুরি। এই কারণে বানিজ্যিক সংস্থা ও সরকারের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া করতে হয় সংস্থার মালিককে। একদিকে বিজ্ঞাপনদাতাকে তুষ্ট রাখা, অন্যদিকে পাঠক বা দর্শকের স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা— এ দুইয়ের সামঞ্জস্যের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে সাংবাদিকের ভূমিকাকে।

স্নেহাশিসবাবুর মতই পুলকেশ ঘোষ বলেন, প্রচারমাধ্যমের ঘরানা বদলে গিয়েছে। পুলকেশবাবুর মতে, এখন অনলাইনে নানা রকম খবর বিভিন্নভাবে পরিবেশিত হচ্ছে। খবর দ্রুততার সঙ্গে ছড়াচ্ছে হোয়াটসআপ, ফেসবুকে। এখন সাংবাদিক কেবল গুটিকয় মিডিয়া হাউসে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা সবাই কমবেশি সাংবাদিক। এ কারণে সবাইকে তথ্য প্রযুক্তি আইন ভাল জানতে হবে। আমাদের অসতর্কতা বা অজ্ঞতায় একটা বিতর্কিত পোস্ট ভিন্ন মাত্রা নিয়ে বহু অশান্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

অশোকবাবু এ দিন বলেন, আপনাদের অনেকের হয়ত স্মরণে নেই বাংলা সংবাদপত্রের ২০০ বছরের সন্ধিক্ষণ আমরা সবে পেরিয়ে এলাম। ২০১৮-র এপ্রিল-মে মাসে শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের দ্বিভাষিক ‘দিগদর্শন’, গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যর ‘বেঙ্গলি গেজেটি’ এবং জন ক্লার্ক মার্শম্যান সম্পাদিত ‘সমাচার দর্পন’ একটা নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

এই ‘সমাচার দর্পন’ও নিরপেক্ষ ছিল না। সেটি সক্রিয় ছিল খ্রিষ্টান মিশনারীদের প্রচারের জন্য। অশোকবাবু সাংবাদিকের ভূমিকা সম্পর্কে দেশ-বিদেশের কিছু বিশিষ্ট সাংবাদিকের উক্তি ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ করেন। বলেন, এখন সাংবাদিককে গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য মালিকের নির্দেশ তালিম করতে হবে। নিছক আদর্শের ভিত্তিতে কলম চালাতে পারবেন না। পরিস্থিতির জন্য অনেকটাই তাঁর হাত-পা বাঁধা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র বেরা বলেন, প্রযুক্তি এখন সংবাদ সম্প্রচারের ঘরানা বদলে দিয়েছে। মুঠিফোনের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে কোনও ছবি বা খবর সম্প্রচার করে দিতে পারেন। এর সুফল-কুফল দুটো ব্যাপারেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে সংযোজনার দায়িত্বে ছিলেন মেদিনীপুর কলেজের ইংরেজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সৈকত সরকার।

Leave a Reply

%d bloggers like this: