রূপকথার মত বদলে যাচ্ছে সুন্দরবনের এক গন্ডগ্রাম

HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা ঃ প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ একফালি গ্রাম। ২৩০টা পরিবার কোনওক্রমে বেঁচে ছিল সুন্দরবনের ওই গন্ডগ্রামে। না ছিল পানের বা চাষের জল, না বিদ্যুৎ, না রাস্তাঘাট। আশপাশে স্কুল না থাকায় পড়াশোনারও বালাই ছিল না ওখানে।
স্বাধীনতার ৬৪ বছর পর কলকাতার ওই গাঁয়ের চেহারা বদলে দিল রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা মেট্রো সাউথ। বছর ৩-৪ এর মধ্যে অনেকটা স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে গ্রামবাসীরা। সেখানে তৈরি হয়েছে তিন তলা বিশাল স্কুল ভবন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর এটির উদ্বোধন হবে। এ ছাড়াও, চাষের জমি, স্বাস্থ্য— এ সবের দিক থেকেও এটিকে একটি আদর্শ গ্রাম করে তুলতে চায় ওই ক্লাব।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলিতর বামন মোল্লারচক নামে এই গ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছে রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা মেট্রো সাউথ। এই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট অসিত তালুকদার বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, তিন বছর ধরে তাঁরা সেখানে স্কুল চালাচ্ছেন। এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ৭০। এটা আগামী কয়েক বছরে এই সংখ্যা আড়াইশ করা হবে। এ ছাড়া ওই ভবনে স্থানীয় ছাত্র-যুবদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে।
অসিতবাবু ছাড়াও এ দিন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রবীর মিত্র, বিগত সভাপতি কুমারশঙ্কর দত্ত, সব্যসাচী বসু, সব্যসাচী দত্ত ও কাকলী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন। তাঁরা জানান, ওই গ্রামে আগে একটি মাত্র ফসল হত। সেচের জলের ব্যবস্থা করে তাঁরা গোটা এলাকা দু’ফসলি করে তুলতে পেরেছেন। ৪৩ জন ভোক্তাকে তাঁদের ১৬৫ বিঘা জমির ওপর পরিকল্পিত চাষ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
এই উন্নয়ন প্রকল্পে রোটারি ক্লাবকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নিমপিঠ রামকৃষ্ণ মিশন। তবে, প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার ওই স্কুল প্রকল্পে মূল আর্থিক অনুদান দিচ্ছেন সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানের রোটারিয়ানরা। ১৭ইয়ের স্কুলভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তাঁরা ১১০ জন এসেছেন কলকাতায়। বিমানভাড়া আর পাঁচতারা হোটেলে থাকার অর্থ ওঁরা নিজেরাই দিয়েছেন বলে জানান।