ফেসবুক প্রণয়ের চরম পরিণতির শিকার হলেন নিউব্যারাকপুর এর রিয়া দে ও মা রমা দে
HnExpress ২৮শে ফেব্রুয়ারী, ওয়েবডেক্স নিউজ, কলকাতা ঃ শেষ পর্যন্ত সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হলদিয়া হত্যায় অগ্নিদগ্ধ দুই দেহের সনাক্তকরন ও হত্যাকারীদের পাকড়াও করলো পুলিশ প্রশাসন। নিহত দুই মহিলা হলেন নিউ ব্যারাকপুর নিবাসী, যথাক্রমে রিয়া দে (২২) ও তাঁর মা রমা দে (৪০)। পুলিশ সুত্রের খবর, রিয়া দে-র সাথে হলদিয়ার ঠিকাদার শেখ সাদ্দাম হুসেনের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিলো। আর সেই ফেসবুক প্রণয়ের চরম পরিণতির শিকার হলেন মা, মেয়ে উভয়ই।
নিউ ব্যারাকপুরের ২২ বছরের মেয়ে রিয়া দে ও ৪০ বছরের মা রমা দে কে হলদিয়ায় ডেকে গণধর্ষণের পর জীবন্ত পুড়িয়ে মারলো তাদের হবু জামাই হলদিয়ার ঠিকাদার শেখ সাদ্দাম হোসেন, তার সাকরেদ শেখ মঞ্জিল আলম মল্লিক ও আরো অনেকে।
শাসকদল ঘনিষ্ট, বিগত লোকসভা নির্বাচনে ভোট লুট করতে গিয়েও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে হলদিয়ার নামকরা ঠিকাদার ও এলাকার সমাজবিরোধী শেখ সাদ্দাম হোসেন, তার সঙ্গে রিয়ার পরিচয় ফেসবুক সূত্রেই। এরপর মায়ের সম্মতিতেই তাদের প্রেম ও ঘনিষ্টতা বাড়তে থাকে। সাদ্দামের বিবি হবার স্বপ্নে মশগুল রিয়া দে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের নাম বদলে আয়েশা দে রাখে।
সুত্রের খবর অনুযায়ী, গত ১৭ ই ফেব্রুয়ারি থেকে মা ও মেয়ে নিউ ব্যারাকপুর থেকে হলদিয়ায় গিয়ে সাদ্দামের আশ্রয়েই ছিল। রীতিমতো পরিকল্পনা করে, আঁটঘাট বেঁধে মা রমা এবং মেয়ে রিয়াকে কলকাতা থেকে হলদিয়ায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল শেখ সাদ্দাম হোসেন। মা-মেয়ের থাকার ব্যবস্থা করেছিল দুর্গাচকের হাসপাতাল রোডের একটি বাড়িতে।
পুলিশের অনুমান, সেখানেই সম্ভবতঃ সাদ্দামের দু নম্বরি কারবার জেনে ফেলে মা ও মেয়ে। তাই নিয়ে ঝামেলা হলে তাদের গণধর্ষণ করে লোপাট করে দেবার ছক কষে সাদ্দাম ও তার বাহিনী। রাতে খাওয়ার সঙ্গে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে বেঁহুশ করা হয় মা-মেয়েকে। তারপর রাতেই শাগরেদদের নিয়ে বেহুঁশ অবস্থাতেই মা-মেয়েকে নিয়ে যায় ঝিকুড়খালির সুনসান নদীর পাড়ে। আর ভোররাতের দিকে সেখানেই জীবিত অবস্থায় আগুন দিয়ে দেওয়া হয় মা-মেয়ের গায়ে।
অচৈতন্য অবস্থাতেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। ১৮ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয়রা নদীর পাড়ে কিছু জ্বলতে দেখেন। তাঁরাই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন দু’টি দেহ পুড়ছে। তখনও আগুন জ্বলছে দাউ দাউ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেই আগুন নেভালেও, দেহ দু’টি সনাক্ত করার মতো অবস্থায় ছিল না। দু’টি দেহই পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। সেখান থেকেই জানা যায়, দু’জনের দেহেই আগুনের ক্ষত ‘অ্যান্টি মর্টেম’ অর্থাৎ মৃত অবস্থায় পোড়ানো হয়নি।
অর্থাৎ জীবিত অবস্থাতেই পোড়ানো হয়েছিল তাদের। তবে কি কারণে, কেন মেরেছে তার তদন্ত চলছে এখনো। ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই আপাতত দুজনকেই গ্রেপ্তার করেছিল হলদিয়া দুর্গাচক থানার পুলিশ। বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, গতকাল ঝিকুরখালি থেকে এই পৈশাচিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত সুকদেব দাস নামে আরেকজন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড়ি দূর্গাচক নিউ কলোনিতে, বয়স ১৮ বছর।