হালিশহরে পুরপ্রধানের পরিদর্শনে ধরা পড়ল অব্যবস্থায় জর্জরিত তিন ওয়ার্ড

HnExpress দেবাশিস রায়, হালিশহর : ইতিমধ্যে হালিশহর পুরসভার ১১ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে অনাস্থা এনেছিলেন। পরে জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তা প্রত্যাহারও করে নেন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা। আর রবিবার, ৭ অক্টোবর পুরপ্রধান স্বয়ং পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে পয়ঃপ্রণালী ও রাস্তার কাজ পরিদর্শনে গিয়ে এলাকার মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন। কদিন ধরেই পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের কাছে অভিযোগ আসছিল কয়েকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের মদতে কিছু দুস্কৃতী রাস্তা ও ড্রেন তৈরির কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। সেই মোতাবেক এদিন তিনি দলীয় কর্মীদের নিয়ে ওই ওয়ার্ডগুলি পরিদর্শনে যান। প্রসঙ্গত, তিনি আবার হালিশহর টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও।

বেহাল রাস্তা খোদ প্রবীণ তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে।

হাজিনগর এলাকার সেন্ট্রাল রোডে প্রবেশের পরেই তাঁকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন ড্রেন পরিস্কার করা হয় না। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে আবেদন-নিবেদনেও কোনও ফল মেলেনি বলেও তাঁরা জানান।

পরিদর্শনে পুরপ্রধান।

প্রসঙ্গত, শ্রীরায় এদিন ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এই ওয়ার্ডগুলির তিনজন কাউন্সিলরই তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে। অংশুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্বিষহ অবস্থার কথা বিবেচনা করে সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার স্যানেটারি আধিকারিককে তলব করেন ঘটনাস্থলে। এবং জানতে চান এধরনের পরিস্থিতির কারণ কী? জানা গেছে, ওই তিন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এবিষয়ে পুরসভার স্যানেটারি বিভাগকে কিছুই জানাননি। স্বভাবতই ড্রেনের জল উপচে রাস্তায় এসে পড়ছে। উল্লেখ্য, এর মাসতিনেক আগেও একবার স্থানীয় বাসিন্দারা ওই তিন ওয়ার্ডের একটির কাউন্সিলর বন্ধুগোপাল সাহাকে রাস্তার জমা জলে হাঁটিয়ে এনে ঘুরে দেখান। তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।

পাল্টা সভা বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে সব শুনে পুরপ্রধান পুরসভার স্যানেটারি বিভাগকে জমা জল নিষ্কাশনের নির্দেশ দেন এবং বলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ড্রেনগুলির বেহাল দশা ঠিক করতে হবে। এরই সঙ্গে তিনি স্থানীয় মূর্তি কারিগরদেরও আশ্বাস দেন পুজো শুরুর আগেই বেহাল রাস্তাও সারাই করে দেওয়া হবে। দুর্গা প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছতে তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। উল্লেখ্য, এই ওয়ার্ডগুলিতেই বসবাস করেন পুরসভার প্রাক্তন প্রধান দীনবন্ধু পাল ও প্রবীণ তৃণমূল নেতা সুভাষ রাহা।

পাল্টা সভা বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের।

সকালে পুরপ্রধান ওয়ার্ডগুলি পরিদর্শনের পর অনাস্থা আনা ১১ কাউন্সিলরের দল ওই এলাকাগুলিতে একটি স্কুলচত্বরে আলোচনায় বসেন বলেও সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত, ওই ওয়ার্ডগুলির এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের কিছু নথি মিলেছে, যা পরবর্তী সময়ে সংবাদের আকারে প্রকাশ করা হবে।

Leave a Reply

Latest Up to Date