হালিশহরে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ১১ জন কাউন্সিলরের

HnExpress দেবাশিস রায়, হালিশহর : আভাস মিলেছিল গত সপ্তাহে ১০ তারিখেই বাংলা বন্ধের দিনই। আর ২০ সেপ্টেম্বর সকালে পুরসভার ১১ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিলেন খোদ এসডিও-কে। সেদিন পুরপ্রধানের ঘরের সামনে জোটবদ্ধ হয়ে একঝাঁক কাউন্সিলর বিক্ষোভ দেখান। পুরপ্রধানের দেহরক্ষীকে টপকে জোর করে ঘরে ঢুকতে যান তাঁরা। তবে জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আশ্বাসে ওই কাউন্সিলররা সরে যান। তারপর কেটে গেছে নয় নয় করে ১০ দিন। কিন্তু জেলা সভাপতি কাউন্সিলরদের নিয়ে আলোচনায় বসার কথা বললেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এমনটাই অভিমত কাউন্সিলর বন্ধুগোপাল সাহার। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাধ্য হয়েই আজ তাঁরা অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। যদিও এদিন পুরপ্রধান ও এগজিকিউটিভ অফিসার কেউই পুরসভায় আসেননি।
আর অনাস্থার খবর চাউর হতেই হালিশহর তথা সারা বীজপুরে চান্চল্য ছড়ায়। সুদূর কলকাতার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে ঘনঘন ফোন আসতে থাকে খবরের সত্যতা জানতে চেয়ে। স্বভাবতই পুরসভার সিআইসি মেম্বার মৃত্যুন্জয় দাসের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। তিনি অনাস্থার চিঠি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছু জানাতে চাননি। এমনই বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন আরও অন্যান্য কয়েকজন কাউন্সিলরও। কেউ কেউ বেশ রাগতস্বরেই বলেন, দলীয় কথা সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাবেন না।
তবে কাউন্সিলর বন্ধুগোপাল সাহা অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন, টেন্ডার ও পুরসভায় চাকরি দেওয়া নিয়ে পুরপ্রধান স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। তিনি দাম্ভিকতায় কোনও কাউন্সিলর বা সিআইসি মেম্বারদের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। যদিও এ সমস্ত অভিযোগ নিয়ে ১০ তারিখে পুরসভায় অশান্তির দিনই পুরপ্রধানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, পুর সদস্যরা যেকোনও সময় তাঁর ঘরে আলোচনার জন্য আসতেই পারেন। তিনি দলের হালিশহর শাখার সভাপতিও। কাউন্সিলরদের তাঁর ঘরে আসার অধিকার রয়েছে। তবে তারজন্য, ন্যূনতম সৌজন্যটা বজায় রাখা উচিত। তবে কেউ যদি নিয়োগ পরীক্ষার ফল বা টেন্ডার নিয়ে অভিযোগ করে থাকেন তবে চ্যালেন্জ করছি স্বচ্ছতা নিয়েই তা করা হয়েছে বা হবে। সবক্ষেত্রেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে দলীয় ও ঠিকাকর্মীদেরই। আর এতে যদি কেউ সন্তুষ্ট না হন আমার কিছু করার নেই। কেউ যদি এতে অস্বচ্ছতা প্রমাণ করতে পারেন আমি পদত্যাগ করব। অনাস্থা প্রস্তাবের প্রয়োজন হবে না। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২০ তারিখের অনাস্থা নিয়ে এসডিও-কে চিঠি দেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জানা যায়নি পুরপ্রধানের মতামতও।
এদিকে দপ্তরে এসেছে এমন কিছু ওডিও রেকর্ডিং ও লিখিত অভিযোগপত্র যাতে স্পষ্ট অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করা বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর কন্ডাক্টর ও সাধারণ মানুষের থেকে মোটা টাকা উপঢৌকন নিয়েছেন।