পুজোর লাভের টাকা নিয়ে সংঘর্ষে মৃত ২
HnExpress পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুর ঃ পুজোর লাভের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হল ২ জনের। মৃতদের নাম পরিতোষ ভৌমিক(৫০) ও সইদুর রহমান(৪৮)। আহত আরও একজন। ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানা এলাকার। আহত সঞ্জয় সরকার গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শনিবার (২৬ জানুয়ারি) গঙ্গারামপুরের ঠেঙাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা শনি পুজোর আয়োজন করে। পুজো উপলক্ষ্যে গতকাল বাউল গানের আসরও বসানো হয়। সেই পুজো থেকে হওয়া লাভের টাকা আজ ভাগাভাগি করা হচ্ছিল। সেখানেই স্থানীয়দের দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, একদল রামদা নিয়ে আক্রমণ করে। রামদার আঘাতে জখম হন সইদুর রহমান। এলোপাথাড়ি গুলিও চালানো হয়। জখম হন পরিতোষ ভৌমিক ও সঞ্জয় সরকার।
বিষয়টি জানাজানি হতেই ঘটনাস্থানে ছুটে আসে এলাকার অন্য বাসিন্দারা। জখম ৩ জনকে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরিতোষ ও সইদুরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে আসে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। সদর মহকুমা পুলিশ শাসক বিপুল ব্যানার্জিও আসেন। পৌঁছায় কমব্যাট ফোর্স। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় চলছে পুলিশি টহল।
ঠেঙ্গাপাড়ার জয়নগরে দুজনের মৃত্যুর পিছনে রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ। এই তত্ত্ব সামনে এল। গতকাল মৃত্যু হয় পরিতোষ ভৌমিক(৫০) ও সইদুর রহমান(৪৮) নামে দুই ব্যক্তির। ঘটনায় জখম হয় নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সঞ্জয় সরকার। শনিবার (১৯ জানুয়ারি) ঠেঙ্গাপাড়ার জয়নগর মোড়ে কালীপুজোর আয়োজন করে স্থানীয়রা। পুজো উপলক্ষ্যে রবিবার (২০ জানুয়ারি) বাউল উৎসবেরও আয়োজন করা হয়। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে সেই উৎসব। গতকাল রাতে সেই পুজো থেকে হওয়া লাভের টাকা ভাগাভাগি করতে বসে পুজো আয়োজকরা। সেইসময় নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাস্তার কাজের হিসাবের প্রসঙ্গ উঠলে স্থানীয়দের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরে তা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে পৌঁছায়।
প্রাক্তন INTTUC-র জেলা সভাপতি মজিরুদ্দিন মিয়া ও নুরুল ইসলামের অনুগামীদের মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক সংঘর্ষ। অভিযোগ, সংঘর্ষের সময় নুরুল ইসলামের গোষ্ঠী এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। গুলিতে পরিতোষ ভৌমিকের মৃত্যু হয়। পালটা রামদা দিয়ে মারতে শুরু করে মজিরুদ্দিন মিয়ার গোষ্ঠী। সেইসময় রামদার আঘাতে সইদুর রহমানের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হন নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় সসরকার। বিষয়টি জানাজানি হতেই ঘটনাস্থানে আসে স্থানীয় বাসিন্দারা। জখম তিনজনকে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরিতোষ ভৌমিক ও সইদুর রহমানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে গঙ্গারামপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। আসেন সদর মহকুমা পুলিশশাসক বিপুল ব্যানার্জিও। পৌঁছায় কমব্যাট ফোর্স। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় চলছে পুলিশি টহল।
এই বিষয়ে মৃত সইদুরের ভাই মেহেরার আলি বলেন, “ঘটনার সময় খাচ্ছিলাম। সেই সময় পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় আমাকে ফোন করে বলে দাদার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। তাড়াতাড়ি থানায় বা হাসপাতালে যাও। প্রথমে থানায় আসি। পরে সেখান থেকে হাসপাতালে এসে দেখি তার দাদা মারা গেছে।” তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় সরকার জানান, ঝামেলা কী কারণে শুরু হয় তা জানা ছিল না। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ গুলি চলতে শুরু করে। তখন গুলির আঘাতে জখম হন তিনি। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী সঞ্জয় সরকার। আর যে গুলি চালিয়েছে সেও তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। যদিও তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কথা অস্বীকার করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।