পাকামো মারতে কে বলেছে, দোকান না খুললে সাধারণ মানুষ খাবে কি ঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
HnExpress ২৭শে মার্চ, নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ঃ লকডাউনের মধ্যে নিয়মের কড়াকড়ি বজায় রাখতে হাতে লাঠি তুলে নিয়েছে পুলিশ। ফলে একদিকে কিছু উপদ্রবীরা ঠান্ডা হলেও অন্য কয়েক শ্রেণীর মানুষ বেজায় সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। যাদের মধ্যে অন্যতম সব্জি ও ভুসিমাল বিক্রেতা। সেই অভিযোগ গত দুদিন ধরেই আসছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কানে। এদিন সরাসরি ময়দানে নেমে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে বললেন, আপনাদের পাকামো মারতে কে বলেছে, দোকান না খুললে সাধারণ মানুষ খাবে কি?
লকডাউনের মধ্যে যাতে সাধারণ মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পেতে অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করতে গতকাল পোস্তা বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট করেন মমতা। সেখানে পৌঁছতেই বিক্রেতারা পুলিশের নামে নানান নালিশের ঝুলি উপুড় করে দেন। সব শুনে পুলিশকে মৃদু স্বরে ভর্ৎসনা করেন মমতা। সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দেন তিনি। কিন্তু সব জায়গায় সেই নির্দেশ কি আদৌও কার্যকরী হচ্ছে?
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পোস্তা বাজারে উপস্থিত হতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পুলিশের ডাণ্ডা চালানো নিয়ে সরব হন। অভিযোগ ছিল মূলত জোড়াবাগান থানার দিকেই। যা শুনে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘জোড়াবাগানকে কে পাকামো মারতে বলেছে? দোকান যদি খোলা না থাকে তবে সাধারণ মানুষ খাবে কী?’ সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশেই উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। তাঁর সামনেই কানে ফোন ধরে জোড়াবাগান থানাকে তিনি নির্দেশ দেন, ‘তোমরা পোস্তা বাজার খোলা রাখো’।
ফোন রাখতেই ব্যবসায়ীদের অনুযোগ, ‘সবাইকে খুব মেরেছে ম্যাডাম। পুলিশ দেখলেই সবাই ভয় পাচ্ছে। সব জিনিস কেড়ে নিয়েছে’। শুনে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বললেন, এবার থেকে আর এসব হবে না। আমি জানতে পেরেছিলাম বলেই এসেছি।’ পুলিশকেও তিনি নির্দেশ দেন, বাজেয়াপ্ত করা সব সামগ্রী যেন অবিলম্বে দোকানকারদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিন বাজারে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত পইপই করে বললেন, বাজার খোলা রাখতে সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়। তবে একাধিকবার তিনি মনে করিয়ে দেন, বেশি দোকান যেন এক সঙ্গে খোলা না হয়। পাঁচ থেকে ছটার বেশি দোকান খুলতে বারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরেও জোর দেন।
কোনও খদ্দের যাতে একে অপরের কাছে না ঘেঁষতে পারে সেটা দোকানদারদেরও বুঝিয়ে দেন মমতা স্বয়ং। বস্তুত গত কয়েকদিন ধরেই বাজারে জিনিসপত্রের অমিলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল পুলিশের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক ও অসহযোগিতার অভিযোগ। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরজমিন তদন্তে নেমে তার মোকাবিলা করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।