নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগল, তাই বসন্ত এসে গেছে
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ আর ক’দিন বাদেই দোল-হোলি। তাই এখন পাড়ায় পাড়ায় বসেছে বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান। আর বড়বাজার জুড়ে সর্বত্র বিকোচ্ছে রং, পিচকারি, হরেকরকম আবির। পাত্রে ডাঁই করা লাল-নীল-সবুজ-হলুদ আবির নিয়ে বসে দোকানিরা। যাঁর যতটুকু দরকার, ওজন করে দিচ্ছেন দোকানি। রয়েছে ছোট ছোট বাক্সের আবিরও। কোথাও কোথাও আবার মিলছে কমলা, গোলাপি আবিরও। ওল্ড চীনা বাজার স্ট্রিটের বিভিন্ন দোকানে ঢুঁ মারতেই দেখা গেল, সেখানে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে আবির, পিচকারি, বাদুড়ে রঙ— এক কথায় বলতে গেলে দোল-হোলিতে রাঙিয়ে দেওয়ার সব উপকরণ।
কয়েকজন ব্যবসায়ী হাসতে হাসতে বললেন, আমরা সিজনাল ব্যবসা করি। এখন দোকান রং-এ ঠাসা। আবার হোলি মিটলেই দেখবেন অন্য পসরা। সামনেই বাংলা নববর্ষ আসছে। সে সময় যেগুলি লাগে, সেই সব জিনিস নিয়ে বসতে হবে।
সোমবার থেকেই রঙে–উৎসবে বসন্ত উদ্যাপন শুরু হয়ে গেছে কলকাতায়। শহরের কয়েকটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে চলেছে আবির নিয়ে প্রাক্–দোল উৎসব। পুরোদস্তুর সেজে গুজে একে অন্যকে রাঙিয়ে দিচ্ছেন শিশু থেকে তরুণ–তরুণীরা। জমছে রঙের খেলা। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের মেয়েদের তৈরি আবির প্যাকেট বন্দি হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে বাজারে বাজারে। মুখে হাসি ফুটছে তাঁদেরও।
এক দিনের আনন্দ যাতে অনেক দিনের হয়, কোনো আপশোস না থেকে যায়, সেদিকে সজাগ বেশির ভাগ মানুষ। ফলে ক্রমশ বিক্রি বাড়ছে ভেষজ আবিরের। এর সুফল হিসেবে আয়ের বিকল্প পথ খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই। কলকাতার বিক্রেতাদের দাবি, এবার রাসায়নিক রঙের চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই অধিকাংশ ক্রেতাও ভেষজ আবির চাইছেন। বস্তায় খোলা আবির তেমন বিক্রি হচ্ছে না। যে–কারণে অনেক নামী–দামি সংস্থাও এ বছর ভেষজ আবির এনেছে বাজারে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ছাত্রী সুপর্ণা মোদক জানালেন, ‘রাসায়নিক রঙে অনেক রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তাতে অনেকেরই অ্যালার্জি বা র্যাশ বের হয়। সেই তুলনায় বলতে গেলে ভেষজ আবির অনেক বেশি নিরাপদ। আর মাখানোর পর দেখতেও সুন্দর লাগে। তাই আমরা এবার আবিরেই রং খেলছি।’