নগরায়ন পরিকল্পনায় বিপন্ন পরিবেশ
HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা : “চলে যাব— তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি— নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গিকার।“
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই অঙ্গীকারের মাধ্যমেই পরিবেশ ও নগরায়ন সম্পর্কে শনিবার সতর্ক করলেন ইন্সটিট্যুট অফ টাউন প্ল্যানার্স-এর (আইটিপিআই-পশ্চিমবঙ্গ) চেয়ারম্যান তথা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডিজি দীপঙ্কর সিংহ। উদ্বোধনী ভাষণে এ দিন তিনি বলেন, সবুজ ধ্বংশ রোধের পাশাপাশি সবুজায়নের পরিমাণ বাড়াতে হবে। টোরেন্টো-সহ বিশ্বের উন্নত নানা শহরে কীভাবে গাড়ির রাস্তার পাশে পৃথক সাইকেল-পথ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হচ্ছে, সে ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান।
ইন্সটিট্যুট অফ টাউন প্ল্যানার্স (আইটিপিআই-পশ্চিমবঙ্গ) ও সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই) আয়োজিত ‘গ্রিন সিটি মিশন- অপরচুনিটিস অ্যান্ড এজেন্ডা ফর অ্যাকশন’ শীর্ষক আলোচনায় দীপঙ্কর সিংহ এবং সিএসই-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুমিতা রায়চৌধুরী ছাড়াও এ দিন বক্তাদের মধ্যে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর ডঃ দেবাশিস দাস, কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরায়ন মন্ত্রকের প্রাক্তন মুখ্য স্থপতি কে কে জোয়ারদার, আইটিপিআই-এর সেক্রেটারি অরবিন্দ দেবনাথ প্রমুখ।
অনুমিতা রায়চৌধুরী এ দিন বলেন, ১৯৭৭ থেকে ২০১১— এই সময়সীমায় পশ্চিমবঙ্গ ১১ বার সাইক্লোনের শিকার হয়েছে। নগরায়ণের প্রবৃদ্ধির মাশুল নানাভাবে দিতে হচ্ছে আমাদের। এখন আদিগঙ্গার ৮৬ শতাংশ পরিবেশের বিপজ্জনক সীমার নিচে নেমে গিয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে কেবল কলকাতায় প্রতি বছর ‘এনার্জি ইউজ’ বেড়েছে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। স্থানীয় প্রতিটি পরিবারে এই পরিমাণ জিডিপি-র ৯ শতাংশ। এ সবের জেরে একদিকে ওজনের স্তর ভারি হচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা।
শনিবার কলকাতায় এই আলোচনাচক্রে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু বিশেষজ্ঞ জানালেন, নগরায়ণ পরিকল্পনায় উপেক্ষিত হচ্ছে পরিবেশের প্রশ্ন। এর মাশুল দিতে হচ্ছে নাগরিকদের। ভবিষ্যতে এর চরম প্রতিক্রিয়া হতে পারে।