বিশেষ প্রতিবেদন : গেঁয়ো যোগী ভিক্ষ পায় না!

HnExpress দেবাশিস রায়, হালিশহর : বাংলায় একটা প্রবাদ বাক্য আছে গেঁয়ো যোগী ভিক্ষ পায় না! সেটা যে শুধু কথার কথায় প্রবাদ বাক্য নয়, তা আরও একবার সত্যে প্রমাণিত হল। ফের বন্চনার শিকার হলেন হালিশহরের ভূমিকন্যা তথা বাংলার মহীয়সী নারী রানি রাসমনি। গতকাল ছিল তাঁর ২২৫তম জন্মদিন। সরকারিভাবে বেশ ঘটা করে কলকাতায় পালিত হল রানির জন্মদিন। সেখানে হালিশহর থেকেও প্রতিনিধিত্ব করতে(পড়ুন কলকে পেতে) ছুটে গেছেন কেউ কেউ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় খোদ রানির জন্মভিটেতে তার বিন্দুমাত্র চিহ্ন দেখা গেল না। হালিশহরের বাগমোড়ে প্রতিষ্ঠিত রানির মর্মরমূর্তিতে জুটল না একটা মালাও।

প্রসঙ্গত, হালিশহরে বাম আমলে গড়ে তোলা হয়েছিল রানির নামাঙ্কিত ট্রাস্টি বোর্ডও। এই ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনের আহ্বায়ক ছিলেন এই অধম প্রতিবেদক। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ মূর্তি প্রতিষ্ঠার সময় রাজনীতির শিকার হতে হয়। যেমনটি হয়েছিলেন রানি স্বয়ং। তিনি যখন তাঁর স্বপ্নের কালীমন্দির তৈরির জন্য হালিশহরকে বেছে নেন, তখন ব্রাহ্মণ সমাজ তা করতে দেননি। কারণ তিনি ছিলেন শূদ্রাণী। সেই মন্দির গড়ে ওঠে দক্ষিণেশ্বরে। আজ যা সারা বিশ্বের কাছে সমাদৃত।ত
সেই শুরু। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ প্রায় দুশো বছর। হালিশহরে তাঁর একাধিক মূর্তি প্রতিষ্ঠা হলেও আজও তিনি ব্রাত্যই রয়ে গেলেন। যদিও সম্প্রতি হলিশহরের রানি রাসমনি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান রতন ঘোষ জানিয়েছিলেন, এখানে রানির জন্মদিন পালন করা হবে যথাযথভাবে। কিন্তু গতকাল তার বিন্দু-বিসর্গ লক্ষ্য করা গেল না। রানি আবারও বন্চিত হলেন হালিশহরে! যেখানে টিভির পর্দায় জি-বাংলা চ্যানেলে রানির জীবনী নিয়ে রমরমিয়ে চলছে বাণিজ্যসফল মেগা ধারাবাহিক, সেখানে তাঁর জন্মদিনে অসমাদৃত রয়ে গেল হালিশহর, বাগমোড়ের তাঁর জন্মভিটেখানি। জন্মদিনে তাঁর জন্মভিটেতে বা তাঁর প্রতিষ্ঠিত মূর্তিতে একটা মালা বা এক অঞ্জলি ফুলও জুটল না। বড় বড় সেলিব্রিটরা তাদের অভিনয় প্রতিভার দক্ষতা দিয়ে রানির জীবনীকে দর্শকের সামনে তুলে ধরলেও বাস্তবিক সমাজে রানি রাসমনি তাঁর জন্মবার্ষিকীতে আদৌ কি যোগ্য সম্মাননা পেল? কিংবা তিনি আদৌ কি মানুষের মনে জায়গা করতে পেরেছেন? আজকের যুব সমাজ আর পাঠকের মনে কিন্তু প্রশ্নটা রয়েই গেল!
খুবই হতাশাজনক । এটুকু দায়িত্ববোধ আমাদের থাকা উচিৎ ।