গভীর রাতে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে কলকাতার ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রাণ বাঁচালেন এক দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবকের
HnExpress ওয়েবডেক্স নিউজ ঃ রবিবার রাত ২টো। রোজকার মতোই রাতে টহল দিচ্ছিলেন গড়িয়া ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট কৌশিক মজুমদার। পাটুলি পেরিয়ে বাঘাযতীন রেলব্রিজে ওঠার মুখেই দেখলেন, ব্রিজের মুখে একজন যুবক পড়ে আছেন। পাশেই পড়ে রয়েছে তার বাইকটি। যুবকটির দেহে তখনও প্রাণ অবশিষ্ট ছিল। যদিও সে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিল। মুখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে অনর্গল। অবস্থা বেশ গুরুতর বুঝেই সার্জেন্ট কৌশিক দ্রুত যোগাযোগ করেন গড়িয়া ট্রাফিক গার্ডে। যে কোনও ভাবে যুবকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল তখনই।
ইতিমধ্যে সেই রাস্তা দিয়ে একটি গাড়ি যেতে দেখেন সার্জেন্ট কৌশিক মজুমদার। দেখেই গাড়িটিকে থামিয়ে তিনি অনুরোধ করেন স্থানীয় হাসপাতালে যুবকটিকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সেই গাড়িতে চাপিয়েই আহত যুবকটিকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বয়ং সার্জেন্ট কৌশিক মজুমদার। একে সংজ্ঞাহীন অবস্থা তাতে সাথে পুলিশ, ফলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয় তার। চিকিৎসকেরা জানান, আর সামান্য একটু দেরি হলেই হয়তো প্রাণসংশয় হতে পারত যুবকটির।
একাধিক জায়গায় চোট লেগেছে যুবকটির। অস্ত্রোপচার করে কেটে বাদ দিতে হয়েছে বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুলও। এছাড়াও, চোখের নিচের হাড় ভেঙেছে, হাতের হাড়ও সরে গিয়েছে। তবে ভালো হেলমেট থাকায় মাথায় অবশ্য তেমন গুরুতর কোনও চোট লাগেনি। সেটা ঘটলে হয়ত বাঁচানো সম্ভবই হত না তাঁকে।
সুত্র অনুযায়ী, যুবকটির সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছিলেন সার্জেন্ট কৌশিক মজুমদার। জানা যায়, যুবকের নাম দীপ মণ্ডল। যোগাযোগ করা হয় তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে। সেই রাতে গড়িয়ার বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইকে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন দীপ। ফেরার পথেই ঘটে মারাত্মক দুর্ঘটনাটি।
তবে আপাতত দীপ সংকটমুক্ত। এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাঁকে। এখনো চিকিৎসা চলছে, সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে হয়তো আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এটা বলাই বাহুল্য যে, সার্জেন্ট কৌশিক সময়মতো দীপকে হাসপাতালে নিয়ে না গেলে বড় রকমের কোনও বিপদ হতে পারত, হয়তো বা জীবনহানিও হতে পারত।
ছবি ও তথ্যসূত্র ঃ সোস্যাল মিডিয়া।