কোথায় কোথায় শুরু হয়ে গেছে ভয়ংকর সাইক্লোন “ফণী”র তান্ডব নৃত্য, এক নজরে দেখে নিন
HnExpress ওয়েবডেক্স নিউজ ঃ প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে অগ্রসর হতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডে পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিশাখাপত্তনমে ১০০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গিয়েছে।
দেশটির অপর সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে তীব্র হাওয়া এবং বৃষ্টির জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক পোল ও গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন সুরক্ষা বাহিনী ।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নামক সাইক্লোন ভারতের ওড়িষা হয়ে শুক্রবার বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে ধেয়ে আসতে পারে বাংলাদেশে। আঘাত হানতে পারে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে। এজন্য মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত ঘোষণার পর থেকেই দেশের উপকূলের সর্বত্র প্রস্তুতি-সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ১০টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে দেয়া আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ক্রমিক নম্বর ২৮ (আটাশ)-এ এসব সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছিল। এদিন আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল থেকেই বাংলাদেশে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস থাকতে পারে। তবে সন্ধ্যার দিকে উপকূলীয় এলাকায় বড় ধরনের আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৫ থেকে ৬ ফুট অব্দি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। প্রতি ঘন্টায় ১৭০ থেকে ১৯৫ কিলোমিটার বেগে বাতাসের শক্তি হাজার কিলোমিটার ব্যাসের বিস্তার নিয়ে এই ঝড় শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
অন্যদিকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৬.০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার (০২ মে) সকাল ০৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯২৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বর্তমানে এটি আরও ঘণীভূত অবস্থায় ও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার (৩রা মে) অর্থাৎ আজ সকাল ১০টা নাগাদ ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে এবং পরবর্তীতে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হয়ে শুক্রবার (৩রা মে) সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার (৩ মে) সকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়ে গেছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র ঃ সোস্যাল মিডিয়া।