কাঁচরাপাড়ায় ফের ডেঙ্গুর থাবা, মৃত মহিলা
HnExpress দেবাশিস রায় : কাঁচরাপাড়ায় ফের ডেঙ্গুতে মারা গেলেন এক মহিলা। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জানা গেছে, গতকাল ২০ অক্টোবর, শনিবার কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে মারা যান তিনি। মৃতের নাম লক্ষ্মী ব্যানার্জি। বয়স ৫৩ বছর। বাড়ি কাঁচরাপাড়ার ১ নম্বর সিদ্ধেশ্বরী লেনে। প্রসঙ্গত, ১৪ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছিলেন রঘুনাথ দাস নামে এক যুবক। বয়স ৪৩ বছর। বাড়ি কাঁচরাপাড়ার মুরগিপাড়ায়। তিনি কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। সেখানে ধরা পড়ে তাঁর রক্তের প্লেটলেট অনেকটাই কমে গেছে। শুক্রবার, ১৪ তারিখ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্জীব সাহা এই মৃত্যু ডেঙ্গুতে নয় বলেই জানিয়েছিলেন সে সময়।
পুজোর কটাদিন মিটতে না মিটতেই সেই একই ওয়ার্ডে ফের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
প্রসঙ্গত, গত বছরেও এমন অজানা জ্বরে কাঁচরাপাড়ায় মৃত্যু হয়েছিল তিন-চার জনের। কেউ কেউ তাঁদের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেও পুরসভা সেকথা মানতে চাইনি। সেসময় পুরসভার বক্তব্য ছিল, জলবাহিত কোনও জ্বরের জন্যই এরা মারা গেছিলেন। ইতিমধ্যে বীজপুর পুলিশ প্রশাসন ও দুই পুর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডে তৃণমূল যুবকর্মীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে পথেও নেমেছিলেন।
ডেঙ্গুর থাবা পড়েছে হালিশহরেও। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন পাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি। খবর পেয়েই আক্রান্তের বাড়িতে ছুটে গেছেন কাউন্সিলর সুনীতা বিশ্বাস ও প্রণব লোহ। তাঁদের উদ্যোগে চলছে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজকর্ম।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, কাঁচরাপাড়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর সিদ্ধেশ্বরী লেনের বাসিন্দা লক্ষ্মী ব্যানার্জি ১২ তারিখ থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার হওয়ায় ১৪ তারিখ কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেদিনই তাঁকে রেফার করে শিয়ালদা বি আর সিং হাসপাতালে। কিন্তু বি আর সিং হাসপাতালেও লক্ষ্মীদেবীর অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায় ১৫ অক্টোবর তাঁকে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ লক্ষ্মী ব্যানার্জির মৃত্যু হয়।
এদিকে লক্ষ্মীদেবীর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, তাদের এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যদিও ওয়ার্ড কাউন্সিলর সঞ্জীব সাহা এই সমস্ত অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করে বলেন, কাঁচরাপাড়া পুরসভার পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সেগুলো নেওয়া হয়, এমনকি বিভিন্ন সময়ে পুরসভার পক্ষ থেকে ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানও করা হয়েছিল। সবশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, এই ওয়ার্ডে শিশু ও মহিলা অন্তত জনাদশেক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।