ঐতিহ্যের বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের পুনর্মিলণ

HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা ঃ বেশ কিছুক্ষন ধরে আতশ বাজির রোশনাই দেখার পর চোখে যেন ঝিলমিল লেগে গিয়েছিল। ক’দিন দু চোখের পাতা এক করতে পারেননি উদ্যোক্তারা। চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল বাজির উজ্জ্বলতায়। বহু প্রত্যাশিত আলোর মালা। যা আমাদের বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের মাস্তুল থেকে এক এক করে অতি যত্নে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো, না দেখা আকাশের উদ্দেশ্যে।

মুখ তুলে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম সেই আলো কখনও আকাশপ্রদীপ, আবার কখনও মালা হয়ে পুনর্মিলনের শামিয়ানার উপরে জ্বলজ্বল করছে। কাউকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা বা দুঃসাহস কোনওটাই প্রাক্তনীদের নেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অন্যন্য শিক্ষক ও ছাত্রদের সহযোগিতায় প্রাক্তনী সংগঠনের সদস্যদের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ১৩ই, মানে রবিবার আবারও হই হই করে পুনর্মিলন ২০১৯ পালন হল।

পায়ে পায়ে ১০০ বছর হল দক্ষিণ কলকাতায় বেলতলা রোডের (অধুনা নরেশ মিত্র সরনি) ঐতিহ্যের এই স্কুলের। সত্যজিৎ রায় থেকে শম্ভু মিত্র, রাহুল দেববর্মন থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন উপাচার্য সব্যসাচী ভট্টাচার্য, প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী
— প্রাক্তনীদের তালিকায় কৃতী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিতদের নাম-তালিকা রীতিমত দীর্ঘ।

নিজস্ব চিত্র।

এবারের অনুষ্ঠানকে সর্বতোভাবে সফল করতে যে সব প্রাক্তনী সক্রিয় ভূমিকা নেন, তাঁরা অনেকেই কর্মজীবনে ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ নানা দায়িত্বে। যেমন রাজ্যের দুই শীর্ষ আমলা অশোকমোহন চক্রবর্তী ও প্রসাদরঞ্জন রায়। আয়োজন করা হয় স্বাস্থ্যশিবির, সাংষ্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান। ছিল বিতর্কসভা— বিষয় ‘পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি বাঙালিয়ানা হারাচ্ছে‘। সপক্ষে ছিলেন অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, লেখিকা চৈতালি চট্টোপাধ্যায় ও প্রবীন বিজ্ঞানি বিকাশ সিনহা। যুক্তিতক্কে ওঁদের বিরোধিতা করেন দেব সাহিত্য কুটিরের কর্ণধার রূপা মজুমদার, সাংবাদিক দিপান্বিতা রায় ও রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। সংযোজনায় ছিলেন অশোকমোহন চক্রবর্তী।

নিজস্ব চিত্র।

অনুষ্ঠানমঞ্চে প্রাক্তন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রূপম দত্ত জানান, “এই কর্মকাণ্ডের সমস্ত নায়কদের আমার তরফ থেকে অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা। জুনিয়রদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশে থাকার এই নজীর আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে। সুগন্ধি ফুলের তোড়া তৈরী করার জন্য যে সামান্য সরু সুতোর প্রয়োজন হয়, আমি তাও নই। কিন্তু সবসময়েই চেয়েছি ভালো ভালো সময় তৈরি করে, তাদের এক জায়গায় এনে, পুষ্পস্তবক তৈরির। আরও বেঁধে রাখার। এই দুদিনের পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমরা অত্যন্ত খুশি। আগামী বছর আবার সকলকে এভাবেই প্রাক্তন ছাত্র সংসদের পাশে পাওয়া যাবে এই আশা রাখলাম।“

Leave a Reply

Latest Up to Date

%d bloggers like this: