এবারে শ্লীলতাহানির শিকার হলেন স্বয়ং জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী সোমলতা আচার্য্য চৌধুরী
HnExpress ওয়েবডেক্স নিউজ, কলকাতা ঃ শ্লীলতাহানির খবর কিছু নতুন নয়, বহু যুগ ধরেই মহিলাদের উপর এই অমানবিক আচরণ ও উৎপীড়ন হয়েই আসচ্ছে। সমাজের নিম্নবর্গের অসহায় মহিলা থেকে শুরু করে উচ্চবর্গের সেলিব্রিটি মহিলারাও এহেন নোংরা আচরণের শিকার হয়েই চলেছে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত। এবারে এরকমই এক জঘন্য পরিস্থিতির শিকার হতে হল স্বয়ং জনপ্রিয় গায়িকা সোমলতা আচার্য্য চৌধুরীকে। হ্যাঁ নিজের এমনই কিছু ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সঙ্গীত জগতের অতি জনপ্রিয় শিল্পী সোমলতা আচার্য চৌধুরী। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ ভিডিও করে তিনি তাঁর প্রতিবাদের তীর ছুড়ে দিলেন এই শিক্ষিত মুখোশধারী নোংরা সমাজের দিকে। আর সেই ভিডিওটি সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল শুরু হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সমগ্র শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের ভিতর। মূলত সোমলতা ও তাঁর সহকারী টিমের অভিযোগ, ধূপগুড়ি কালিরহাট দেওয়ান চন্দ্র হাইস্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গিয়ে ঐ স্কুলেরই এক শিক্ষক অর্ণব সাহার হাতে নোংরা আচরণের শিকার হন তাঁরা। সুত্রের খবর, অনেক কষ্টে এলাকার পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় ও সহযোগিতায় তাঁরা তাদের দল নিয়ে ধূপগুড়ির হোটেল থেকে গতকাল রাতেই বাগডোগরা বিমানবন্দরে চলে আসেন। আর ঠিক এরপরেই জনপ্রিয় গায়িকা কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও করে তাঁদের সাথে হওয়া এই অমানবিক ও অভদ্র আচরণের অভিযোগ জানিয়ে সুবিচারের প্রত্তুত্তর চান বাংলার আপামর জনগণের কাছে।
তবে প্রশ্ন হল, সেদিন কী কী ঘটেছিল সেখানে? সব সময় সব জায়গাতেই এই ধরনের ঘটনার দায় বা দোষের বোঝা সমাজ তুলে দেয় সেই নির্যাতিত মহিলার কাঁধেই, কারণ সমাজের একাংশের মতামত বা ধারণা (যদিও সেটা সম্পুর্ণ ভূল ধারণা) অধিকাংশ শ্লীলতাহানির ঘটনাই নাকি মহিলাদের পোশাকের জন্যই ঘটে। পুরুষদের নাকি এতে কোন দোষ বা দায়ে নেই। তবে কি সেই গায়িকার ক্ষেত্রেও ঐ একি কারণ প্রযোজ্য? কি বলছে সোমলতা তাঁর ফেসবুক লাইভে? শুনে নিন তাঁর জবানিতে তিনি যা বললেন সোশ্যাল মিডিয়াতে- “শুক্রবার ধূপগুড়ির ওই স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান ছিল৷ ওই স্কুলেই আমার নিজের ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে গান গাইতে গিয়েছিলাম৷ ওই স্কুলেরই শিক্ষক অর্ণব সাহা নামে সেই মহান ব্যাক্তি তাঁকে মঞ্চে উঠে নানা ভাবে হেনস্থা করতে থাকে৷ মঞ্চে উঠে ওই শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পাশাপাশি আমার উদ্দেশ্যে নোংরা কুরুচিকর মন্তব্যও করে৷ সেদিন শুধু আমিই নন, অপমান করা হয় আমার দলে থাকা অন্যান্য শিল্পীদেরও৷ আর সেই সময় ওই ব্যক্তি ছিলেন সম্পুর্ণ মদ্যপ অবস্থায়৷
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই আমি তড়িঘড়ি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি৷ এবং অনেক কষ্টে যোগাযোগ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে, কিন্তু ওই শিক্ষকের লোকজন পুলিশের উপরেও হামলা করে বলে অভিযোগ, অবশেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ৷ এরপরে যদিও উত্তরবঙ্গ জেলা পুলিশের উদ্যোগে কোনওক্রমে ওই স্কুল থেকে হোটেলে পৌঁছাই আমি৷ এমনকী পুলিশ পাহারায় আমাদের বিমানবন্দরেও পৌঁছে দেওয়া হয়৷ শিক্ষকের এমন আচরণে আমরা রীতিমতো অপদস্থ ও অপমানিত বোধ করছি৷ তাই অন্য জেলায় গিয়ে অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রেও এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান সোমলতা৷ তাঁর ফেসবুক লাইভ নিয়েই এখন সোশাল মিডিয়াতে চলছে জোর আলোচনা৷ শুধু সোমলতাই নন, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা৷
সোমলতা আরো জানান, ‘‘সেদিন যে ঘটনাটি ঘটেছিল তা ভীষণই অনভিপ্রেত৷ যা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷ সমাজের একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে যা ছিল খুবই অপমানের৷ এর সঙ্গে আমার মিউজিশিয়ানদেরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়৷ তাই আমি আমার মত করে প্রতিবাদ জানিয়েছি এই জঘন্য আচরণের৷ অন্যদিকে এই অশ্লীল আচরণের অভিযোগের ভিত্তিতে ফেসবুক লাইভ ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে জলপাইগুড়ির পুলিশ প্রশাসন। আর তাই জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
Astonishing news .