November 14, 2024

পালিত হল এক ব্যতিক্রমী রাখী বন্ধন

0
Advertisements

HnExpress অলোক আচার্য্য, কলকাতা : রাখী বন্ধন উৎসব, ভাইফোঁটার পূর্বেই এমন এক উৎসব যা বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষে অতিরঞ্জিত ভাবে পালন করা হয়।পুরানে কথিত আছে শ্রীকৃষ্ণকে দ্রৌপদীর রাখী পরানোর মাধ্যমে এই উৎসব এর সূত্রপাত হয়। প্রতিটি মেয়েরা এই দিনটির জন্য দিন গুনতে থাকে।
কত হইচই, কত হুল্লোড়, কত মজার মধ্যে দিয়ে আমরা এই দিনটি কাটাই। কিন্তু আমরা কি কখনো এটা ভেবে দেখেছি কি এমন অনেক স্থান আছে যারা এর ছোঁয়াই পায় না। সমাজ তো বড়ো হচ্ছে কিন্তু কিছু তথাকথিত ভদ্রলোক এর জন্য ঘরের মা-বাবা, ঘরের ভাই-বোন ঠাঁই পাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম বা অনাথাশ্রমে। যার হাত ধরে একটা ঘর বাড়িতে রূপান্তরিত হয়, সেই মা, বোন, দিদিটি আজ বৃদ্ধাশ্রমে। তারাও কিন্তু এই দিনটির জন্য বসে থাকে অধির আগ্রহে। মাঝে মাঝে ক্যালেন্ডারের পাতাও উলটে দেখে। কিন্তু কি লাভ? যে চোখে আনন্দের ঝলকানি ওঠার কথা, সেই চোখে এই দিনটিতেও পরে থাকে শূন্যতা, আর কান্নাভেজা। আমরা কি পারি না অন্তত এই দিনটাতে তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে?

হ্যাঁ এমনই এক ভাবনাকে মাথায় রেখেই সম্প্রতি কৃষ্ণনগর বাইকার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হলো। সংস্থার পক্ষ থেকে তারা HnExpress মিডিয়ার সংবাদ প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষ্যাৎকারে জানালেন যে, বৃদ্ধাশ্রম এর মায়েদের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা এদিন হাজির হই বৌ বাজার এর একটি বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাদের হাত থেকে রাখী পড়ে আমরা উভয়ের মধ্যে ফুটিয়ে তুলি ভ্রাতৃত্বের সোহাগ। সকাল ৯ টার মধ্যে ক্লাবের উৎসাহী সদস্যদের নিয়ে রওনা হই বৃদ্ধাশ্রমের উদ্দেশ্য। এদিন তারা একে একে বৃদ্ধাশ্রমের সকলের সাথে পরিচয় করি, চলে গল্পগুজব ও মতবিনিময়। বয়স্ক মানুষগুলোর সাথে টিফিন ভাগ করে নেওয়া হয়। এরপর আরম্ভ হয় রাখী বন্ধন উৎসব, পরস্পরকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। সেদিন বৃদ্ধাদের সেই আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো। এর পাশাপাশি কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এদিন। বৃদ্ধাশ্রম এর পরিচালকদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সবশেষে দুপুরে চলে একসাথে খাওয়া দাওয়ার পর্ব। এই সমস্তের ফাঁকে ফাঁকে বয়স্ক মানুষগুলোর মনে ভেসে আসে সেই সব পুরনো দিনের স্মৃতি, মনে পড়ে যায় অনেক কথা — নতুন ভাইদের কাছে পেয়ে যদিও তারা অনেকটাই মনের কষ্ট লাঘব করতে পারেন। অন্যদিকে, ক্লাবের সদস্যরাও দিনের শেষে যখন বাড়ি ফেরেন, তখন তাদের প্রাপ্তি কিছু অবহেলিত মানুষের ভালোবাসা ও অজস্র স্মৃতি। ক্লাবের অন্যতম সদস্য সুদীপের কথায় — ‘সেবা কাজ চলতে থাকুক / হাসি মুখ গুলো আরো হাসুক’।

Advertisements

Leave a Reply