উৎসবের তৃতীয় সূত্র জগদ্ধাত্রী পুজো
HnExpress দেবনাথ চক্রবর্তী, চন্দননগর : কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর নাটমণ্ডপে দুর্গার আর এক পরমব্রহ্মময়ী রূপ শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু করেন প্রায় ছ’শো বছর আগে। জনসাধারণের জন্য থাকতো উন্মুক্ত দ্বার। শীতবস্ত্র বিতরণ থেকে শুরু করে সমস্ত আতিথেয়তায় ভরিয়ে দিতেন আপামর জনগণকে। সেই উৎসব কালে কালে তাঁরই অনুরোধে দেওয়ান হুগলির আদি সপ্তগ্রামে তাঁর নিজের বাড়িতে শুরু করেন জগদ্ধাত্রী পুজা।
তাঁরই অধীনস্থ পূর্বতন ফরাসডাঙায় ছিল জমিদারী চালের আড়ত। সেখানেও শুরু হলো এই পূজার প্রচলন আনুমানিক প্রায় পাঁচশো বছর আগে। পরবর্তীকালে এই ফরাসডাঙাই হয়ে ওঠে চন্দননগর। দেওয়ানের সেই আড়তের পুজা হয়ে ওঠে চালপট্টির পুজো যা সমগ্র বিশ্বে বেশ ওজনদার পুজো বলে পরিচিত এবং ব্যয়সাপেক্ষ থীমের বাহার সমৃদ্ধ।
ক্রমে ক্রমে হুগলি জেলার বহু জমিদার বাড়ির পাশাপশি স্থানীয় বহু ক্লাব সংগঠন আয়োজন করতে থাকে এই মহাপুজার যা ভারতের উৎসবের মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। ফরাসীদের আধিপত্যের প্রভাবে সারা পৃথিবীতেও পরিচিত চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো।
চার দিন ব্যাপী এই উৎসবে বিশেষ সহযোগিতা করে। বিশালাকার মূর্তির ও থীমের এবং আলোর রোশনাইয়ে হয়ে ওঠে জমজমাট। কয়েকলক্ষ দর্শনার্থীদের ভিড় হয় দেখার মত। রাত জেগে ঠাকুর দেখা ও বিসর্জন দেখার উদ্দেশ্যে বহুদূর থেকে উপস্থিত হন কাতারে কাতারে দর্শনার্থী।
এখানকার পুজোগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, চালপট্টি, বৌবাজার, বাগবাজার, চৌমাথা, তেঁতুলতলা, দর্জিপারা প্রভৃতি প্রথিতযশা সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজা।
এই পুজোকে ঘিরে স্থানীয় মানুষদের উল্লাস লক্ষ্যনীয়। এলাকার প্রতিটি পরিবারে আলোর সংকট থাকলেও খুব সহজেই তাঁরা মেনে নেন শুধুমাত্র উৎসবের উদ্দামতায়। সব মিলিয়ে শারদীয়া উৎসবের আরও একটি আঁচ এখানে ফুটে ওঠে জগদ্ধাত্রী আরাধনার মধ্যে। তাই খুব সহজেই বলা যায় এটি উৎসবের তৃতীয় সূত্র॥
বাঃ ! শুভেচ্ছা…..