পালিত হল বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চের পক্ষ থেকে ইস্টার সান্ডে বা পূণ্য রবিবারের উপাসনা

HnExpress অলোক আচার্য, মধ্যমগ্রাম : ইস্টার সান্ডে বা পূণ্য রবিবারের পবিত্র পার্বণ উপলক্ষ্যে মধ্যমগ্রাম বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ, গতকাল ২১শে এপ্রিল ২০১৯, তাদেরর সকল মন্ডলীগুলিতে যা সম্পূর্ণ পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতা ডায়োসিসের অধীনে ৪০০ এরও অধিক রয়েছে, তাদের সাথে নিয়ে পবিত্র উপাসনার আয়োজন করেন। ইস্টার সান্ডে বা পূণ্য রবিবারের আসল মহত্ত্ব হলো, প্রভু যীশু খ্রীস্ট এর পুনরুত্থিত দিবস। ইস্টারের দুই দিন আগেই পালিত হল গুড ফ্রাইডে বা পূণ্য শুক্রবার।অর্থাৎ এই দিনেই খ্রীস্টিয় মতে সমগ্র সৃষ্টির মালিক প্রভু যীশু খ্রীস্ট সমগ্র জগতবাসীর পাপের নিমিত্ত প্রচন্ড দুঃখভোগ, মানসিক অবমাননা ও ৩৯ টি চাবুকের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে কালভেরীর ক্রুশে পিতার ইচ্ছায় নিজের প্রাণ বিসর্জন দিলেন। কারণ যে তাঁর এই বলিদানকে সম্মান জানিয়ে তাঁকে ঈশ্বর রূপে বিশ্বাস ও ভরসা করবে সে কোনো মতেই মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না, বরং সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হবেন।
আর তিন দিন পরে পবিত্র বাইবেল শাস্ত্রমতে প্রভু যীশু পুনরায় কবর থেকে পুনরুজ্জীবিত হয়ে তাঁর শিষ্যদের মাঝে ফিরে আসেন এবং ৪০ দিবারাত্র তাদের সাথে বসবাস করে স্বর্গে পিতার কাছে ফিরে যান। আর সেই কারনে এইদিনটি যীশুর পুনরুত্থান দিবস উপলক্ষে মহা সমারোহে পালিত হয়, আর তা ইতিহাসের পাতায় পূন্য রবিবার বা ইস্টার সান্ডে নামে আখ্যায়িত হয়। “কারণ ঈশ্বর জগতকে এমন, এমন প্রেম করিলেন, যে আপনার একজাত পুত্র কে দান করিলেন ; যেন যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত, অনন্ত জীবন পায় “! যোহন- ৩ঃ১৬ পদ
আর এই দিনটির অতি প্রভাতে চার্চের মহিলাদের সহভাগীতা মন্ডলী মধ্যমগ্রামের মুখ্য পথে গানের মধ্য দিয়ে একটি ক্যান্ডেল সহযোগে পদযাত্রার আয়োজন করেন। যা প্রভু যীশুর ঐতিহাসিক পবিত্র পুনরুত্থানকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই দিনটিতে অতি প্রত্যুষে, প্রায় সকাল ৫ ঘটিকাই বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ, সেন্ট থমাস ক্যাথড্রেলে ইস্টার, বিশেষ উপাসনার দ্বারা প্রভু ভোজের সহিত এই সহভাগীতার আয়োজন করেন, যা মধ্যমগ্রাম বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ ও কলকাতা ডায়োসিসের আর্চ বিশপ হিজ গ্রেস যাস্টিন মার থোমার দ্বারা উদযাপিত করা হয়। এদিন এই পবিত্র খ্রীষ্টিয় উপাসনায় উপস্থিত ছিলেন বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চের ভিকার জেনারেল রেভঃ ফাদার সোমেন পান্ডা, রেভঃ ফাদার রাজু বর্ণাব্বাস, স্থানীয় যাজক রেভঃ ফাদার শম্ভু দাস ও রেভঃ ফাদার সত্যজিৎ স্যামুয়েল।
এই পবিত্র পুনরুত্থানের সময়ে আর্চ বিশপ যাস্টিন মার থোমা তার বার্তায় বললেন যে, এটি বিশ্বস্তপূর্ণ যে, আজকের দিনেই প্রভু যীশুর পুনরাত্থান হয়েছিল আমাদের জন্য, যাতে আমরা পবিত্র জীবন লাভ করি। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা সকলের জন্য এবং তাহার মৃত্যু আমাদেরকে ঈশ্বরের সেই মহৎ প্রেম ও আত্মবলিদানকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই প্রেম যার মধ্যে দিয়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মানবতার সব থেকে বড় শত্রু অন্ধকার মিশ্রিত মন্দতাকে দমন করেন। যে কেউ প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করে সে সর্বদা নিজের জীবনে প্রভু যীশুর সামর্থ্য ও মন্দতার উপর বিজয় ও আনন্দ, আশা ও জীবনে শান্তি অনুভব করবে। এর পাশাপাশি গতকাল পবিত্র পুনরাত্থানের দিনটিতে কলকাতা ডায়োসিস, পুরুলিয়া ও বুনিয়াদপুর মিশন ডায়োসিস আইলেন্ড ও পূর্ব মেদিনীপুর চার্চ ডিস্ট্রিক্টগুলিতে বিভিন্ন খ্রীষ্টিয় সহভাগীতা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রভুর প্রেমকে স্মরণ করে শারীরিক রূপে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু ব্যক্তিদের ট্রাই সাইকেল ও বিধবা অসহায় মায়েদের এবং প্রয়োজনপূর্ণ মায়েদের বস্ত্রদান করা হয়।