September 12, 2024

আসন্ন নির্বাচনে হতে চলেছে নারী-শক্তির জয় জয়কার, শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা

0
Advertisements

HnExpress বিশেষ প্রতিবেদন, ফারুক আহমেদ ঃ ঠিক যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নারী- শক্তির জয় জয়কার দেখে সবাই অবাক হয়েছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫০ শতাংশ সিটে মহিলা প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবারেও লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৪১ শতাংশ সিটে মহিলা প্রার্থী দিয়ে সকলকেই টেক্কা দিল তৃণমূল এর দলনেত্রী তথা বাংলার মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪২ টি আসনের মধ্যে ১৭ জন মহিলাকেই টিকিট দিয়েছে তিনি।

এবছরের এই নির্বাচনে যত সংখ্যক মহিলা প্রার্থী হয়েছেন তা একটা রেকর্ড বলেই গণ্য মনে করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আর সর্বোপরি যেভাবে মহিলা প্রার্থীরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তা আগামীতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। এটা ভারতের ইতিহাসে একটা ঐতিহাসিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত হতে চলেছে বলে একাংশের মতামত।

আগামী ২৩ মে ফলাফল ঘোষণার পরে হয়ে তো দেখা যাবে বাংলা থেকে সব চেয়ে বেশি মহিলাই লোকসভার সদস্য হয়েছেন এবং মহিলা প্রার্থীরা জয় লাভ করতে পেরেছেন।

সুত্র অনুযায়ী এই মুহুর্তের ভোট প্রচারের আবহাওয়া বলছে, বশিরহাটের নুসরাত জাহান, যাদবপুরের মিমি চক্রবর্তী, আসানসোলের মুনমুন সেন, উলুবেড়িয়াতে সাজদা আহমেদ, কৃষ্ণনগরের মৌহা মৈত্র, বর্ধমানের মোমতাজ সংঘমিত্রা, আরামবাগের রূপা পোদ্দার সহ অন্যান্যদের জয় প্রায় নিশ্চিতের পথে।

প্রসঙ্গত, কাজী নজরুল ইসলাম সমকালে নারী সমাজের মুক্তির লক্ষ্যে যারা একনিষ্ঠ ভাবে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে অগ্রণী ছিলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে কাজ করেছিলেন মিসেস এম রহমান, শামসুন্নাহার মাহমুদ, সুফিয়া কামাল সহ বেশ কয়েকজন নারী।পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কখনও কখনও মৌখিক ভাবে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের ব্যাপারটি স্বীকার করা হলেও বাস্তব ক্ষেত্রে অবস্থাটা কিন্তু সহজেই অনুমেয়। তাই কাজী নজরুল ইসলাম-তাঁর ’নারী’ কবিতায় ঘোষণা করলেন—

“সাম্যের গান গাই,

আমার চক্ষে পুরুষ রমণী কোন ভেদাভেদ নাই,

বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।

বিশ্বে যা কিছু এল পাপ- তাপ বেদনা অশ্রুবারি

অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।’

ইতিহাস পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রত্যেকটি সফলতার নেপথ্যেই কাজ করেছে নারীর শক্তির প্রেরণা, সাথে রয়েছে নারীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উপস্থিতি। তাই তো কবি বলেছেন —

‘কোনকালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারি,

প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।’

কিন্তু নারীর সে অবদান যথাযথভাবে উঠে আসেনি, এ ব্যর্থতার দায় সমাজের এড়ানোর কোন সুযোগ নেই।

‘জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান

মাতা ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।

কোন রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে,

কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে।

কত মাতা দিল হৃদয় উপাড়ি কত বোন দিল সেবা,

বীরের স্মৃতি- স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা? ’

অবশেষে আশার কথা এই যে, বর্তমানে সামাজিক পরিবর্তনের পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও ঘটেছে কিছুটা। একবিংশ শতাব্দীর এই দিনে নারী-পুরুষের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে উঠতে চলেছে, আর এখানেই সমস্ত কবির সার্থকতা প্রতীয়মান। হয়ে তো নির্বাচনের ফলেও আমরা দেখবো সেই নারী-শক্তির জয় জয়কার।

Advertisements

Leave a Reply