অবশেষে শহীদ বাবলু সাঁতরার কফিন বন্দি দেহ এল হাওড়ার বাড়িতে
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া : শনিবার সকাল থেকেই এলাকা ছিল শোকস্তব্ধ৷ তবুও তার মাঝেই শহিদের বাড়ির কাছের একটি মাঠে শুরু হয় প্রস্তুতি,এই মাঠেই এক সময় দাপিয়ে ভলিবল খেলেছেন বাবলু সাঁতরা৷ অবসরের পর এখানে ভলিবল প্রশিক্ষণকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। শনিবার তখনও এসে পৌঁছয়নি তাঁর স্বামীর কফিনবন্দি দেহ। সকাল থেকে বাউড়িয়ার চককাশী রাজবংশীপাড়ায় ভিড়। ক্ষণে ক্ষণে স্লোগান উঠছে, বাবলু সাঁতরা অমর রহে।দাবি উঠছে দোষীদের শাস্তির। তার মধ্যেই মুখ খুললেন পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান বাবলুর স্ত্রী বলেন ‘‘যুদ্ধে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করি না”। যুদ্ধে আরও কোনো মায়ের কোল খালি হবে। সরকারের উচিত সমাধানের মাধ্যমে পথ খোঁজা। তবে, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাউড়িয়ার সেই মাঠে এসে পৌঁছোয় শহীদ বাবলু সাঁতরার কফিন বন্দি দেহ। সেখানে তাঁকে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সিআরপিএফের আধিকারিকরা।এছাড়াও উপস্থিত মন্ত্রী অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাঃ নির্মল মাজী, বাবুল সুপ্রিয়, সহ অন্যান্য বিধায়ক ও আধিকারিকরা মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। পরিবারের মা, স্ত্রী ও মেয়ে সহ প্রতিবেশীরাও শ্রদ্ধা জানান শহিদ বাবলু সাঁতরাকে। গান স্যালুট দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে। এদিন রাতেই স্থানীয় শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য হয় বলে জানা গিয়েছে।বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামার ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছেন হাওড়ার বাউরিয়ার চককাশী রাজবংশী পাড়ার বাসিন্দা সিআরপিএফ জওয়ান বাবলা সাঁতরা৷ দীর্ঘ কর্মজীবনে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন ভারতীয় সেনার এই বীর যোদ্ধা৷ বারাবরই রণক্ষেত্রে শত্রুর বুলেটের সামনেও নিডর ছিলেন তিনি৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার পাক মদতপুষ্ট জইশ জঙ্গিদের কাপুরুশোচিত হামলায় শহিদ হন তিনি৷তাই বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর থেকেই মনটা আনচান করছিল বাবলার পরিবারের৷ এদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ নয়াদিল্লি থেকে ফোন আসে৷ আর তারপরই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় সাঁতরা পরিবারের৷ জানতে পারেন, তাঁদের প্রিয় বাবলা আর নেই৷ শোকে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার৷ প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন৷ বোঝাচ্ছেন, দেশ মাতৃকার জন্য নিজের বলিদান দিয়েছেন বাবলা৷ কিন্তু তাতে কি আর মন মানে সদ্য স্বামী হাড়া স্ত্রী বা পুত্র হাড়া পিতা মাতার৷ বারবার তাদের মনে হচ্ছে, আর কোনও দিনই ফিরবে না ছেলেটা৷ কয়েক মাস পরেই চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যেত এই জওয়ানের৷ দেড় মাস আগে যখন বাড়িতে এসেছিলেন, তখনই মা’কে সে কথা বলে গিয়েছিলেন, আর বলে ছিলেন তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন৷ কিন্তু সেই ফেরা আর স্বাভাবিক হল না৷ এবার বাবলা ফিরলেন বাড়ি কিন্তু তা কফিন বন্দি অবস্থায়৷