অনুব্রতকে স্বস্তি দিয়ে গ্রেপ্তার তৃনমূল নেতা উজ্জল কাদরি

HnExpress ভাস্কর বাগচি, বীরভূম : গত নভেম্বরেই পুলিশকে কার্যত নির্দেশ দিয়েই বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি বলেছিলেন, গ্রেপ্তার করা হোক বোমা মারার নায়ক উজ্জল কাদরিকে। সেই মতই দুমাসের মাথায় গ্রেপ্তার হলেন কাদরি। সুত্র থেকে জানা গেছে যে, বৃহস্পতিবার রাতেই খয়রাশোলের এই নেতাকে গ্রেপ্তার করে কাঁকরতলা থানার পুলিশ। কাদরির গ্রামের বাড়ি কৈথি থেকেই রাতে তাকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরে কৈথি গ্রামে একটি গন্ডগোলের জেরে কাঁকরতলা থানার পুলিশ ওই গ্রামে গেলে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশকে আক্রমণ করা হয়। এই ঘটনায় নাম জড়িয়ে পরে ওই এলাকার তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল কাদরির নাম। সেই ঘটনাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে কাদরিকে। এক সময়ে অনুব্রত মণ্ডলের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই বাড়বাড়ন্ত ছিল এই কাদরির। স্পর্শকাতর এই খয়রাশোলের খনিজ সম্পদের দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের নিজস্ব গোষ্ঠি সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। নিজেদেরই দলের প্রশ্রয়িত দুষ্কৃতিদের হাতে গুলিবিদ্ধ বা বোমার আঘাতে প্রান দিতে হয়েছে তিন তিন জন ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে অন্য নেতা কর্মীদের। আর সেই সময় থেকেই বারংবার উঠে আসে উজ্জল কাদরির নাম। যদিও সেই সময় নিহতদের পরিবারের অনেকেই সরাসরি উজ্জলের দিকে আঙুল তুললেও পুলিশ উজ্জলকে ছুঁতে পারেনি কারন একটাই, তাঁর মাথায় ছিল অনুব্রত মণ্ডলের হাত ।
যদিও গত কয়েকমাস ধরেই অনুব্রতের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হচ্ছিল কাদরির। অনুব্রতের আনুগত্যের বাইরে গিয়ে নিজস্ব আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন নিজস্ব দলবল নিয়ে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলেন বীরভূমের সর্বাধিনায়ক। গত ১১ ই নভেম্বর বোলপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভা থেকে অনুব্রত মণ্ডল এই নেতাকেই গ্রেপ্তারের জন্য বলেছিলেন। বোলপুরে একটি দলীয় সভায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তৃণমূল কার্যকরী বুথ সভাপতি উজ্জ্বল কাদরীকে সরাসরি গ্রেফতারের নির্দেশ দেন সেদিন। তিনি সভায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন, “উজ্জ্বল বোম মারার নায়ক, ওকে এখুনি অ্যারেস্ট করো।”
সেদিন উজ্জ্বলের বক্তব্য ছিল, “তিনি নির্দোষ, জেলা সভাপতিকে হয়তো কেউ ভুল বুঝিয়েছে, তার জন্যই তিনি একথা বলেছেন।”
স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন তাহলে কি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির অঙ্গুলী হেলনেই গ্রেপ্তার করা হলো উজ্জ্বলকে ? গ্রেপ্তার যদি করার হত তবে পুলিশকে আক্রমনের পরে পরেই গ্রেপ্তার হলেন না কেন কাদরি ? ঘটনার প্রায় দু’ মাস পরে এই গ্রেপ্তার রক্ত ভেজা খয়রাশোলে আবার কোন রাজনীতির পাশা খেলছে নাতো?